সব
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ৩ দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।বৃহস্পতিবার সকালে তারা এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এক বিবৃতিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মাহিদুল হক অয়ন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রতীক বিশ্বাস জানান, বুধবার রাত ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজন ও পুলিশ ক্যাম্পের কতিপয় সদস্য কর্তৃক ন্যক্কারজনক-বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী তিন কর্মদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান দিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে কঠোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
বিষয়টি নিয়ে মমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। এতে সাময়িক সমস্যা হলেও আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করছি। এই বিষয়ে কী করা যায়—তা আমরা দেখছি।’
এর আগে গতকাল রাতে পুলিশ-ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ডা. জাকিউল ইসলাম জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনসে কর্মরত এএসআই মাহমুদুল হাসান তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিনের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের পুরাতন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মাহমুদুল কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকেন। তখন ওই চিকিৎসক অন্য রোগী দেখছিলেন এবং পরে আসবেন বলে জানান। এতে এএসআই মাহমুদুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। সেই সময় হাসপাতালে কর্মরত আনসার সদস্যরাও পুলিশের পক্ষে তর্কে জড়ায়।
খবর পেয়ে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন এবং এএসআই মাহমুদুল হাসানকে পুলিশের ক্যাম্পে নিয়ে যান। ঘটনার প্রতিবাদে কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক পুলিশ ক্যাম্পে যাওয়ার পর ২ পক্ষের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৮ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন।
এই ঘটনার পর রাতেই জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুম আহাম্মদ ভূঁঞা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্য আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এসপি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হানুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য