সব
নিজস্ব প্রতিবেদক::
গণঅধিকার পরিষদের খুলনা জেলার সদস্য সচিব হামিদুর রহমান রাজীবকে মধ্যযুগীয় কায়দায় ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি। এ বিষয়ে বাপ্পি অভিযোগ করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) খুলনা থেকে মিটিং শেষ করে বাইকে করে বাইপাস ধরে ফুলবাড়িগেট যাচ্ছিল রাজীব ভাই। আড়ংঘাটা পার হওয়ার পর ৪/৫ জন যুবক তার গাড়ি গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে।
তারা মাথায় বুকে ও পেটে ঘুষি দেয়৷ একজন পর পর কয়েকবার বুকে লাথি দেয়। এসময় তাকে বলে ‘তুই খুলনায় ভিপি নূরের সেক্রেটারি, নূরের দল কেনো করিস’ তখন রাজীব বলে আমার ভালো এ জন্য তার দল করি। তখন তার হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ডান চোখের নিচে প্রচন্ড শক্তিতে ঘুষি দেয়। সাথে সাথে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর পিচের রাস্তায় তার পা ধরে টানতে টানতে ২/৩ জন তাকে রাস্তার পাশের জমিতে নামিয়ে ফেলে। এতে তার পাঞ্জাবি, পিঠ ও কোমরে ছিলে যায়। তখন রাস্তার পাশের জমিতে নামিয়ে শুরু হয় আবারও মারধর।
এ সময় তাদের মধ্যে একজন বলে, ভিপি নূরের দলকে ভালো লাগাচ্ছি। এমন মামলা দিবো ৬ মাসেও বের হতে পারবি না যতদিন বেচে থাকবি তুই এলাকায় ভিপি নূরের নাম উচ্চারণ করতে পারবি না তখন রাস্তায় কয়েকজন গাড়ি থামিয়ে হয়তো পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা তাদেরকে বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করে। তখন তার দুই পায়ের নিচে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে। তখন ওদের মধ্যে একজন বলছিল, তোদের নেতা ভিপি নূরকে ডাক। এরকমের ১০/১৫ বার পায়ের তলায় আঘাত করার পর একজন এসে তার পুরুষাঙ্গ বরাবর কয়েকটা লাথি দেয়। আরেকজন মোমবাতি ধরিয়ে নিয়ে এসে মোমবাতি গলিয়ে গলিয়ে পুরুষাঙ্গে ফোটা ফেলতে থাকে।
আরেকজন এসে তার বুকের উপর কয়েকটা লাথি দেয় এবং বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করে বলে, ভিপি নূরকে আসতে বল। এলাকার পোলাপানদের নূরের দলে আসতে বলিস। তোর এতো বড় সাহস। এলাকায় কেউ বিএনপির নাম নিতে পারে না আর তুই নূরের নাম নিস। তোকে মেরে ফেললেও কিচ্ছু হবে না৷ উপরের নির্দেশ। ১৫/ ২০ মিনিট ধরে এসব চলতে থাকে। একটি মোমও সম্পূর্ণ শেষ হয়। এসময় ওরা ৩/৪ জন তাকে টেনে তুলে বাইকের মাঝখানে বসিয়ে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। ছেড়া জামা চেঞ্জ করায়। তখন তার পকেটে থাকা ১ টা ফোন ও মানিব্যাগ পান নি। সাথে থাকা আরেকটা ফোন ওরা বাড়িতে থাকা অবস্থায় নিয়ে নেয়। তখন বাড়ির সব জিনিসপত্র এলোমেলো করতে থাকে। তার সামনে থেকে বাসায় থাকা দামী ঘড়ি, কিছু নগদ টাকা ওরা পকেটে ভরে ফেলে। তারা তার বৃদ্ধ মায়ের সামনে তাকে আবারও ভিপি নূরের নাম নিয়ে গালাগালি করে। মায়ের সামনে ওরা উচ্চস্বরে গালাগালি করে বলে, আপনার ছেলে ভিপি নূরের দল করে। ওর এত সাহস কে দিছে। এমন মামলা দিবো জীবনেও বের হতে পারবে না। এ কথা বলে তার মায়ের সামনে তারা তার মাথায় ও বুকে প্রচন্ড আঘাত করে। এসময় তার মা কেঁদে ফেলে। তারপর তাকে নিয়ে আসে ডিবি কার্যালয়ে।
সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমি রাজীব ভাইয়ের সাথে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে গ্রেপ্তারের রাতের ভয়াবহ বর্ণনা গুলো তার মুখে জানতে পারলাম। রাজীব ভাই এখনও ঠিকঠাক হাঁটতে পারছেন না। তার চোখের নিচে ফুলে আছে এবং কালো দাগ রয়েছে। তাকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
মন্তব্য