সব
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা পাগলা থানা উস্থি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজী বিবেকের বিরুদ্ধে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বাল্য বিয়ে পড়ানো সহ নানা অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
কাজী বিবেকের আপন ছোট ভাই আমির হামজা সৃজনকে দিয়ে দুনম্বর নকল বই দিয়ে নিকাহ ও কাবিন ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন করে থাকে। এনিয়ে বাল্য বিবাহের শিকার আফরোজা আক্তার (নিরা) নিজেই বাদী হয়ে উস্থি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছে বিচার চেয়েও বিচার পাইনি বলে জানিয়েছেন। প্রতারক ভুয়া কাজী ইমদাদুল হক ও সহকারী কাজী বিবেক বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে আসছে এব্যাপারে মুখ না খুলতে।
জানা যায় উস্থি ইউনিয়ন বড়বাড়ী গ্রামের কাজী এমদাদুল হক ও কান্দিপাড়া গ্রামের কাজী মোঃ বিবেক নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারী কোন ধরণের বিধি বিধানের প্রতি তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একগোয়ামীভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্কুল মদ্রাসা পড়ুয়া মেয়েদের বাল্য বিবাহ করাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, কাজী এমদাদুল হকের অফিস সহকারী উস্থি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের কাজী বিবেককে দিয়ে বিগত দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম পরিচালনা করেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা প্রলোভন ও ধোকা দিয়ে এবং জন্ম তারিখ অদল-বদল-নকল করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে পড়াচ্ছে। এমনকি কোন বিবাহের কাবিননামার নকল তুলতে গিয়ে ওই সহকারীকে দিতে হয় ২হাজার থেকে ৫হাজার টাকা। প্রায় সময় কাজী এমদাদুল হক নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে এবং প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে তার সহকারী বিবেককে দিয়ে সকল বিবাহ কাবিননামা সম্পন্ন করে আসছেন। এমনও নজির রয়েছে, বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনে বয়স বাড়ানোর জন্য কনের পিতার কাছ থেকে কাবিননামার ফিসের বাহিরে অতিরিক্ত আরো ১০/২০হাজার টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, চলতি সনের গত ৩১শে অক্টোবর উস্থি ইউনিয়ন কান্দিপাড়া গ্রামের আওয়ালের মেয়ে আফরোজা আক্তার (নিরা) এর সাথে বাল্য বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের বড়বাড়ী গ্রামের মোঃ আলী ফরায়জীর পুত্র মোঃ সোহেল রানা। অথচ: কনে আফরোজা আক্তার (নিরা) এর নামে ইউনিয়ন থেকে ইস্যুকৃত জন্ম সনদে জন্ম তারিখ ২০০৬সনের ১৯শে ডিসেম্বর (১৬বছর) এ বিষয়ে কাজী এমদাদুল হক ও কাজী বিবেকের সাথে কথা হলে বলেন, বিয়ে হয়েছে বই দেখে পরবর্তীতে জানাবেন বলে ফোন রেখে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, কাজী এমদাদুল হক ও সহকারী কাজী বিবেক অবৈধ উপায়ে কাজী ব্যবসা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ জমি-জমা কিনেছেন।
এবিষয়ে গফরগাঁও উপজেলার হেড কাজী মোঃ মোশাররফের সঙ্গে কথা হলে জানান, এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।
এ প্রসঙ্গে আফরোজা আক্তার (নিরা) বলেন, এটা আমার জন্ম নিবন্ধন কার্ড কাজী বিবেক আমার অল্প বয়সে কাবিন করে আইন ভংঙ্গ করেছে তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও দূর্নীতি দমন কমিশন কাজী এমদাদুল হক ও সহকারী কাজী বিবেকের এসব অনিয়ম তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
উস্থি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ তোতা মিয়া বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে ছেলে মেয়ে উভয়ই বাল্য বিবাহের বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে কাজী এমদাদুল হক ও বিবেকের বিরুদ্ধে। উক্ত বিষয়টি আমি দেখবো বলে আশ্বাস দিয়েছি বলে জানান।
পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ জানিয়েছেন, বাল্য বিবাহের বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কাজীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য