সব
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের পলাশতলি গ্রামের পলাশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম আব্দুস সাত্তার এর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে গত ৩০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোঃ আবু হানিফা।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটিসহ নিয়োগ বাছাই কমিটির স্বাক্ষর জাল করে ২০০৪ সালে মোঃ বিলাল হোসেন সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) কে নিয়োগ প্রদান করেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে এ শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করার পর সে বিদ্যালয়ে আসেননি কোনদিন। হঠাৎ করেই ২০১৭ সালে এই শিক্ষক বিদ্যালয়ে হাজির হন এবং প্রধান শিক্ষক হাজিরা বহিতে স্বাক্ষর করান। এ শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি জানেনা ম্যানেজিং কমিটির কেউ।
আরও জানা যায়, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক জাল নিবন্ধন সনদে ১৪ অক্টোবর ২০১০ইং তারিখে বিদ্যালয়টি নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে থাকাকালীন সময়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে ছাকিয়াতুল জান্নাত নামের এক শিক্ষিকাকে নিয়োগ প্রদান করেন। উক্ত শিক্ষিকা বর্তমানে সমাজ বিজ্ঞান পদে এমপিওভুক্ত রয়েছেন। তাঁর ইনডেক্স নাম্বার ১০৬৯০৬৭।
উপজেলা শিক্ষা অফিস এনটিআরসিএ নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকের তথ্য চাওয়া হলে ঐ শিক্ষিকার তথ্য প্রধান শিক্ষক প্রেরণ করেননি। উক্ত শিক্ষকের বিএড প্রশিক্ষণ না করেও প্রধান শিক্ষকের অনুমোদনক্রমে বি.এড স্কেলে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। প্রধান শিক্ষক করোনাকালীন সময় ভুয়া শিক্ষক তৌহিদুজ্জামানকে দিয়ে সরকারী প্রণোদনার টাকা উত্তোলন করেন। যে শিক্ষক নিয়োগের পর অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। এমনকি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও না করার অভিযোগে রয়েছে।
অপর অভিযোগে প্রকাশ পায়, প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে দুই থেকে চার দিন পর স্কুলে এসে শিক্ষক হাজিরা বহিতে সকল কর্মদিবসের স্বাক্ষর করেন। এছাড়াও এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনিয়ম, অর্থ কেলেংকারী ও নারী কেলেংকারীসহ নানা অভিযোগ তোলেন এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেন বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এইচ. এম. আবদুছ ছাত্তার এর কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার মোবাইল নাম্বারে ফোন দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাসায় গিয়ে দেখা যায় তালা দিয়া। তিনি কোথায় আছেন তা কেউ বলতে পারে না।
ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. আ. মান্নান বলেন, আমি আগের কমিটিতে ছিলাম, এখনো আছি। কোন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কমিটিকে জানাতো না। নিয়োগের পর কৌশল করে স্বাক্ষর নিত। ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি জয়নাল আবদিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, আবেদনটা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
মন্তব্য