সব
ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার কানিহারি ইউনিয়নের ভূমি অফিসে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। কেউ দলিল লেখক পরিচয়ে কেউ ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অন্যের ভূমি নাম খারিজ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছে প্রতিনিয়ত। সাধারণ মানুষ ভূমি সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনে কর্মকর্তার কাছে যাওয়ার আগে কয়েকদফা সাক্ষাৎ হয় দালাল চক্রের সাথে, তারা দিয়ে থাকেন নানান ধরনের আকর্ষণীয় অফার। তাদের মাধ্যম ছাড়া কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাতে যেন সাত সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার সমান।
সম্প্রতি কানিহারি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানার হাতে টাকার লেনদেনের একটি ভিডিও ফুটেজ ঘুষ লেনদেনের দায় চাপিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠেছে। সর্বমহলের মাঝে বইছে সমালোচনার ঝড়।
তবে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার ভিডিও ফুটেজের টাকা আসলে ঘুষের নাকি ভূমি কর? এ নিয়ে স্থানীয় দালাল চক্রের মাঝে গ্রুপিং’র সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একাধিক সূত্র।
সচেতন মহলের মাঝে প্রশ্ন উঠছে ঘুষ গ্রহনকারী আর প্রদানকারী যদি সমান অপরাধী হয় তাহলে ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ঘুষ প্রদানকারী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নয়?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজের অনুসন্ধানে সরেজমিনে তদন্তে বেরিয়ে আসে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ভিন্ন ভিন্ন মতামত।
ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ ইউসুফ আলী এক সাক্ষাৎকারে জানায়, আমি সব দালালদের নাম বলতে পারব না, কারন ওরা প্রভাবশালী, সবার কথা বললে আমি অফিসে বসতে পারব না। দালালদের কাজ না করে দেওয়ার কারনেই নায়েব সাহেব দালাল চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছে। তবে আমি বিস্তারিত আর কিছু বলতে পারব না, ঘটনার দিন রাসেল সরকার ও সাবেক যুবলীগ নেতা বুলবুল উপস্থিত ছিলেন, আপনারা তাদের কাছে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এবিষয়ে দলিল লেখক রাসেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন কে ভিডিও করছে আমি জানিনা তবে ফুটেজে আমার ছবি আসছে। এসময় বলেন ভাই এই নায়েব মহিলা কানিহারি থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে অনেক ভুক্তভোগী আছে, নায়েবের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করুন আমি খরচের টাকা নিয়ে দিব। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন আমি ব্যস্ত আছি, আসতে এক দেড় ঘন্টা সময় লাগবে। এরপর প্রায় দুই ঘন্টা অপেক্ষা করেও তার দেখা মিলেনি।
যাবেক যুবলীগ নেতা বুলবুলের সাথে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
কানিহারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল মন্ডল জানান, এই ভূমি অফিসে দালালদের আনাগোনা বেশি, ঘুষের টাকা এভাবে প্রকাশ্য নেয় এটা ভাবার বিষয়, হতে পারে এটা দালাল চক্রের কাজ। তবে বর্তমান পরিস্থিতি দালালদের মাঝে দুই গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। এই সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গেলে সবচেয়ে ভাল।
সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দালাল চক্রদের আইনের আওতায় এনে ভিডিও ফুটেজ এর রহস্য উদঘাটন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজ।
মন্তব্য