সব
জিএমপি, গাজীপুর এর বাসন থানাধীন টানা কড্ডা সাকিনস্থ তাকওয়া ফার্মেসী এলাকার বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর ট্রাভেল
এজেন্ট ব্যবসায়ী হেদায়েত লস্কর এর হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার করল পিবিআই গাজীপুর জেলা।
মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী ১। আনোয়ার হোসেন (৩৪), পিতা-মৃত সরাফত আলী, সাংশাহজাতপুর খান পাড়া, থানা-মেলান্দহ, জেলা-জামালপুর, এ/পি. সাং-টান কড্ডা, খোয়ারপাড়া ওয়াজ উদ্দিনের বাড়ী, থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুর, ২। ফারুক আহম্মেদ (৫২), পিতা-মৃত বারেক শেখ, সাং-দিঘীরচালা চান্দনা চৌরাস্তা, থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুর দ্বয়কে ইং ১৫/১০/২০২২ তারিখ রাত ২২.০০ ঘটিকার সময় এসআই (নিঃ), মিজানুর রহমান এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে জিএমপি, গাজীপুর এর বাসন থানাধীন টান কড্ডা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরন অত্র মামলার ভিকটিম হেদায়েত লস্কর (৪২), পিতা-মৃত আবুল কাশেম লস্কর, মাতা-মৃত হাজেরা বেগম, সাং-বাঐসোনা, থানা-নড়াগাতি, জেলা-নড়াইল, এ/পি. সাংকড্ডা গোলটেক, থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুর একজন ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী। বাদীনির স্বামী বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে ভারত থেকে বিভিন্ন প্রকার ঔষধ বাংলাদেশে এনে দিত। এজাহারনামীয় আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ অসুস্থ্য থাকায় বাদীনির স্বামীর মাধ্যমে ভারত থেকে ঔষধ আমদানী করত। এজাহারনামীয় আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ এর জন্য ভারত থেকে ঔষধ এনে গত ইং ২৫/০৭/২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ১০.২০ ঘটিকার সময় বাসন থানাধীন টান কড্ডা সাকিনস্থ তাকওয়া ফার্মেসী বরাবর গাজীপুর-টাঙ্গাইল গামী মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ফুটপাতের উপর গেলে ঔষধের দাম নিয়ে বাদীনির স্বামীর সাথে এজাহারনামীয় আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ এর কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাত অনুমান ১০.২৫ ঘটিকার সময় এজাহারনামীয় আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ উত্তেজিত হয়ে বাদীনির স্বামীকে কিল ঘুষি মারতে থাকার একপর্যায়ে বাদীনির স্বামী মাটিতে পড়ে গেলে আশেপাশের লোকজন বাদীনির স্বামীকে তাকওয়া ফার্মেসীতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা অবস্থায় বাদীনির স্বামীর শারীরিক অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন বাদীনি ও তার আত্মীয় স্বজনদের সংবাদ দিলে বাদীপক্ষ ঘটনাস্থলে যেয়ে বাদীনির স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুরে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদীনির স্বামীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এই সংক্রান্তে ভিকটিমের স্ত্রী যুথি আক্তার (৩৩),পিতা- আরফান আলী, স্বামী মৃত- হেদায়েত লস্কর, সাং-গুলদীগালা (কড্ডা গোলটেক), থানা- বাসন, জেলা- গাজীপুর বাদী হয়ে বাসন থানায় এজাহারনামীয় ০১ জন আসামীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে বাসন থানার মামলা নং-১৭ তারিখ-২৬/০৭/২০২১ ইং ধারা-৩০২ পেনাল কোড রুজু হয়।
সূত্রে বর্ণিত মামলাটি বাসন থানা পুলিশ তদন্ত করে এজাহারনামীয় একমাত্র আসামীকে অত্র মামলার দায় হতে অব্যহাতির আবেদন করেন বাসন থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট তথ্যগত ভুল নং-৩২, তারিখ-২৭/১০/২০২১ ধারা-৩০২ পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। বাদীনি উক্ত চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নারাজীর আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজীর আবেদন মঞ্জুর করতঃ মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
অতিরিক্ত আইজিপি পিবিআই প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক
নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ মিজানুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন এজাহারনামীয় আসামী তারিকুজ্জামানের ব্যক্তিগত গাড়ীর ড্রাইভার ছিল। আসামী তারিকুজ্জমান লিভারের সমস্যা থাকায় সে ভিকটিম হেদায়েত লস্বকরের মাধ্যমে ভারত হতে ঔষধ এনে সেবন করত। গত ইং ২৫/০৭/২০২১ তারিখ আসামী আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলের নিকট খাইরুলের দোকানে চা খেতে যায়। তখন আসামী তারিকুজ্জামান ও হেদায়েত লস্করের মধ্যে তর্ক তিবর্ক শুনে এগিয়ে যায়। ঔষধের দাম নিয়ে একপর্যায়ে আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফকে ভিকটিম হেদায়েত লস্কর মারতে
উদ্যত হলে আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ ভিকটিম হেদায়েত লষ্করকে এলোপাথারীভাবে মারধর করে, মারপিটের ফলে ভিকটিম হেদায়েত লষ্কর রাস্তার পাশে ড্রেনে পড়ে গেলে আসামী আনোয়ার হোসেন ভিকটিমকে ড্রেন হতে উপরে তোলে।
তখন এজাহার নামীয় আসামী তারিফুজ্জামান @ তারিফ সহযোগী আসামী আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেন যে ভিকটিম হেদায়েত লস্করকে লাথি মেরে ড্রেনে ফেলে দিতে বলে। তখন আসামী আনোয়ার হোসেন লাথি দিয়ে ভিকটিমকে ড্রেনে ফেলে দেয়। কিছুক্ষন পর আসামী আনোয়ার হোসেন পুনরায় ভিকটিম হেদায়েত লস্করকে ড্রেন হতে তোলে আনে তখন আসামী তারিকুজ্জামান @ তারিফ এর শ্বশুর সহযোগী আসামী ফারুক আহম্মেদ ভিকটিম হেদায়েত লস্করকে লাথি মেরে ড্রেনে ফেলে দেয়। আসামী আনোয়ার হোসেন ভিকটিম হেদায়েত লস্করকে পুনরায় ড্রেন হতে উপরে তোলে আনে। তখন
ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ছিলো এবং ভিকটিমের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ভিকটিমের আত্মীয় স্বজন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভিকটিম মারা যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে পিবিআই এর হেফাজতে সে ভিকটিম হেদায়েত লস্কর এর হত্যাকান্ডে জড়িত মর্মে স্বীকার করে। উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে ০১ দিনের পুলিশ রিমান্ডে প্রাপ্ত হয়ে ইং ১৭/১০/২০২২ তারিখ বিজ্ঞ আদালত, গাজীপুরে সোপর্দ করা হলে উক্ত আসামী নিজেকে জড়িয়ে নাম উল্লেখ করে ভিকটিম হেদায়েত লস্কর এর হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা করে বিজ্ঞ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, গাজীপুরে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মন্তব্য