সব
গোপালগঞ্জে নবজাতক যমজ কন্যাসহ চার শিশুর মায়ের মৃত্যুর পর রাজনৈতিক একটি মামলায় বাবা জামাল মিয়াকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এমন অবস্থায় দুগ্ধপোষ্য দুই নবজাতক বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন পার করছে দুই শিশু।
সরেজমিনে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামে গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
জামালের মা গোলেজান বেগম জানান, গত ৩০ অক্টোবর যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন পুত্রবধূ সাথী বেগম। তাদের নাম রাখা হয় আনিশা ও তানিশা। এর এক সপ্তাহের মাথায় মৃত্যু হয় সাথীর। ৮ নভেম্বর রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামালকে গ্রেফতার করে। জামালকে ছেড়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা দিতে না পারায় তাকে গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়।
গোলেজান আরও জানান, সাজ্জাদ ও আফসানা নামে জামালের আরও দুটি সন্তান রয়েছে। সাজ্জাদ সপ্তম ও আফসানা প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ হতে বসেছে তাদের পড়া-লেখা। রাজনীতি না করেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা শিকার হয়ে জেলে থাকা সন্তান জামালের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
আমতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মুহাম্মদ সেলিম মিয়া জানান, জামাল একজন দিনমজুর। তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করায় গ্রামবাসী উদ্বিগ্ন। জামালের স্ত্রীর মৃত্যু ও তার জেলে যাওয়ার পর পরিবারটি দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। নবজাতক দুটিকে দাদি, নানি এবং মামি দেখাশোনা করছেন। প্রতিবেশীরাও সহযোগিতা করছেন।
এ দিকে এমন বিপদের দিনে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো স্বজন ও প্রতিবেশীরা জামালের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
গ্রেফতারের বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ শহরতলীর ঘোনাপাড়া এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জামালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জামালকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবির বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ ছাড়া জামালের স্ত্রীর মৃত্যু ও যমজ নবজাতক থাকার বিষয়টি জানতেন না বলেও দাবি করেন ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ।
মন্তব্য