সব
নাসিরাবাদ কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিতে সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের কার্যকারিতা স্থগিত করেছে মহামান্য হাইকোর্টের বিচারক মো. খাসরুজ্জামান ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের আদালত।
ময়মনসিংহ-৪ আসনে অবস্থিত নাসিরাবাদ কলেজে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান। এ জন্য তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচনের জন্য কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন। আর এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে।
জানা গেছে, মোহিত উর রহমান জাতীয় সংসদের প্যাডে দেওয়া ডিও লেটারে তার আস্থাভাজন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহমেদ খানকে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি করার জন্য সুপারিশ করেছেন। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী।
গত ১৪ মার্চ দেওয়া ওই ডিও লেটারে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বাবা সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এই কলেজে তার শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন। এই কলেজের সঙ্গে তার পরিবারের অসংখ্য স্মৃতি জড়িত ও কলেজটির উন্নয়নে তার বাবার অবদান রয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি কলেজটির গভর্নিং বডিতে নিজের পছন্দের লোককে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করতে চান।
এদিকে, ২০২১ সালের ৩ জুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে গভর্নিং বডির নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের গভর্নিং বডি (সংশোধিত) সংবিধি -২০১৯ এর ধারা -২৭ অনুযায়ী গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস পূর্বে বিভিন্ন ক্যাটাগরি যেমন- শিক্ষক, অভিভাবক, প্রতিষ্ঠাতা, দাতা এবং হিতৈষী প্রতিনিধি নির্বাচনের নিমিত্তে গভর্নিং বডির সভায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে।
উক্ত কমিশনের তিনজন সদস্য হবেন ১. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত গভর্নিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য, ২. গভর্নিং বডির মনোনীত এমন একজন শিক্ষক যিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না এবং ৩. অধ্যক্ষ, যিনি রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গভর্নিং বডি গঠনের লক্ষ্যে উল্লেখিত বিধি মোতাবেক নির্বাচন কমিশন গঠন করে এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় কমিটি গঠনের আবেদন বিবেচনা করা হবে না বলেও ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা আছে।
তবে বর্তমান সংসদ সদস্য এসব নিয়মের বাইরে গিয়ে নিজের পছন্দের লোককে কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি করতে চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে এলাকাবাসী ও কলেজ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মোহিত উর রহমানের এমন আগ্রাসী আচরণ অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে, এসব অনিয়ম রোধ করতে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নাসিরাবাদ কলেজের বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি আমিনুল হক শামীম জনস্বার্থে এই রিট করেছেন। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে বিচারক মো. খাসরুজ্জামান ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের আদালত ওই ডিও লেটারের কার্যকারিতার ওপর স্টে অর্ডার জারি করেছেন।
মন্তব্য