সব
রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ২৭ লাখ টাকার জাল নোট, বিদেশি মুদ্রা এবং জাল নোট ও স্ট্যাম্প তৈরির সরঞ্জামসহ জালিয়াতি চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-তেজগাঁও বিভাগের একটি টিম।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা-তেজগাঁও বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উজ্জল দাস ওরফে সোবহান শিকদার, আব্দুর রশিদ, মোঃ মমিনুল ইসলাম ও শাহ মোঃ তুহিন আহমেদ ওরফে জামাল।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ২৭ লাখ টাকার বাংলাদেশি জাল নোট, বাংলাদেশি ২০০ টাকার নোট সদৃশ জাল টাকা বানানোর ২টি তামার প্লেট, ১৩টি জাল টাকা তৈরির স্ক্রিন ফ্রেম, বিভিন্ন সাইজের জাল টাকা তৈরির সিকিউরিটি সুতা, ২টি জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরির পজেটিভ (ফর্মা), ৯টি ফয়েল পেপার, ২টি জাল টাকা কাটার কাজে ব্যবহৃত গ্লাস, ১০টি ট্রেচিং পেপার, ২৫টি রঙের কৌটা, ১টি হটগান, ১টি লেমিনেটিং মেশিন, ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ২টি ডাইস, ১০টি স্ক্রিন তৈরির কাপড়, ১০০০ পাতা সিকিউরিটি সুতাযুক্ত সাদা কাগজ, ১,২১০ পাতা সাদা কাগজসহ জাল টাকা, রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও বিদেশি জাল মুদ্রা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) বেলা ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল নোট ও জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরির জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা উজ্জল দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দারুস সালাম থানার একটি বহতল ভবনের ৫ম তলার ফ্ল্যাট বাসায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দেশের জাল মুদ্রা, রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও তৈরির সরঞ্জামাদিসহ রশিদ, মমিনুল ও তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মতিঝিল থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ, নয়াবাজার ও মিটফোর্ট থেকে রঙ, ফয়েল ও পজেটিভ সংগ্রহ করে জাল নোট ও জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি করে থাকে। বর্তমান বিশ্ববাজারে ডলার সংকট হওয়ায় গ্রেফতারকৃতরা ভারতীয় জাল রুপি ও মার্কিন জাল ডলার বিদেশে পাচার করছে। কম মূল্যমানের নোট যেমন ১০০ ও ২০০ টাকার নোটও জাল হচ্ছে, যা প্রায় খালি চোখে ধরা অসম্ভব। বিশেষত ২০০ টাকা সদৃশ পিতল/তামার তৈরি প্লেট দিয়ে প্রস্তুতকৃত জাল টাকাগুলো আসল টাকার মতোই নিখুঁত।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবত সংঘবদ্ধভাবে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প মেয়াদে বাসা ভাড়া নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে। এরপর তারা বাংলাদেশি বিভিন্ন মূল্যমানের জাল নোট, ভারতীয় রুপি, মার্কিন ডলার, বিভিন্ন মূল্যমানের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প তেরি করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় করতো। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে যে পরিমাণ জাল টাকা তৈরির কাগজ ও অন্যান্য উপকরণ পাওয়া গেছে তা দিয়ে আগামী ঈদুল ফিতর এর আগে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যমানের দেশি ও বিদেশি জাল মূদ্রা এবং রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরি করে বাজারজাত করা সম্ভব।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
মন্তব্য