সব
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরির কারখানার সন্ধান ও চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- লিয়াকত হোসেন জাকির ওরফে মাজার জাকির ওরফে গুরু জাকির, তার দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ বেগম, লিমা আক্তার রিনা ও সাজেদা আক্তার।
অভিযানে প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা এবং আরও প্রায় তিন কোটি জাল টাকা তৈরির মতো বিশেষ কাপড়/কাগজ, বিশেষ ধরনের কালি, ল্যাপটপ, চারটি প্রিন্টার, বিভিন্ন সাইজের কয়েক ডজন স্ক্রিন/ডাইস, সাদা কাগজ, হিটার মেশিন, নিরাপত্তা সুতাসহ জাল টাকার হরেক রকম মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ২০০, ৫০০, এক হাজার টাকার জাল নোট ও ভারতীয় ৫০০ রুপির বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (৮ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুটি বাসায় অভিযান শেষে গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মশিউর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-সেবা এসব কথা জানান।
তিনি জানান, বাজারে পাওয়া ২২ এমএম সাদা কাগজ কালার প্রিন্টারে দিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জাল টাকা ও ভারতীয় মুদ্রা তৈরি করে আসছিল চক্রটি। চক্রের মূলহোতা জাকির ১২ বছর ধরে ৫০০ ও এক হাজার টাকার জাল নোট তৈরি করে আসছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ যেন সন্দেহ করতে না পারেন সেজন্য বর্তমানে ১০০ ও ২০০ টাকার জাল নোট তৈরি করতেন। ঈদুল আজহা টার্গেট করে চক্রটি বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তিনি আরো জানান, ‘তারা ব্যক্তি পর্যায়ে জাল টাকা বিক্রি করলে ধরা পড়তে পারেন, সেই ঝুঁকি এড়াতে অনলাইনে (বিশেষত ফেসবুক ও মেসেঞ্জার) দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে জাল নোট বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতেন তারা।
তিনি জানান, জাকির অত্যন্ত দক্ষ জাল নোট তৈরির কারিগর। তার চক্রে বহু নারী ও পুরুষ রয়েছেন। এইসব কর্মচারীকে মাসে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা বেতন দিতেন তিনি। জাকির যে বাসায় অবস্থান করে জাল নোট বানাতেন সেই বাসার আশপাশে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি করতেন যেন তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরতে না পারে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই তিনি পালিয়ে যেতেন।
গোয়েন্দা এই কর্মকর্তা জানান, চক্রের মূলহতা জাকির রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন। জামিন পেয়ে তিনি আবারও একই কাজে জড়িয়ে যান।
মন্তব্য