সব
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততার কারণে কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুরুষদের বড়ো একটি অংশকে পরিবার ছেড়ে শহরে কাজ করতে যেতে হয়,তাদের সে সামর্থ্য নেই, যে তাঁরা গ্রামে অলস সময় কাটাবেন।
বিশ্বব্যাংকের ২০১৪ সালে পরিচালিত সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে নদী ও ভূগর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাবে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে পানীয় জল ও সেচের ঘাটতি বাড়বে, যা প্রায় ২৯ লক্ষ দারিদ্র মানুষের জীবনযাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা অ্যাডভান্সিং আর্থ অ্যান্ড স্পেস সায়েন্সের গত বছর প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ অভিবাসী বা স্থানান্তরিত হবেন, নিম্নভূমির দেশ হওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ বিশেষভাবে সংবেদনশীল বলে জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে।
কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকে গ্রামে পরিবার রেখে দূরে কাজে যান। এদেরই একজন কৈখালী ইউনিয়নের সুন্দরবনের কোঁলঘেঁষে বসবাসকারী রাশিদুল ইসলাম, যিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ইটের ভাটাগুলোতে সর্দার হিসেবে কাজ করেন।
গ্রামে কোনো কাজ নেই,লবণাক্ততা এখানে উপার্জনের সব সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে,এছাড়া ও সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল অনেক জেলে বাওয়ালী, কিন্তু সরকারি বিভিন্ন বিধিমালায় সুন্দরবনের বেশি অংশকে অভয়ারণ্যে ঘোষণা হওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় উপকূলবাসী যাহা একটি জনগোষ্ঠিকে বাস্তহারা পর্যন্ত করছে,ও মারাত্মক সংকটে উপকূলবাসী তাই অধিকাংশ সক্ষম পুরুষ কাজ করতে অন্য জেলায় যায়,৭৫ বাংলাদেশের প্রতিবেদককে বলেন পূর্ব কৈখালীর রশিদ গাজী।
কয়রা উপজেলার বেদকাশি ইউনিয়নের রহিমা বেগম প্রতিবেদককে জানান, ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ভাঙনে ঘর ভেসে যাওয়ার পরে পরিবার নিয়ে দুই ছেলের একজন ঢাকাতে রিকশা চালায় অন্যজন যশোর চলে গেছে।
ছেলেদের বোঝা বাড়াবেন না বলে তিনি থেকে গেলেও সংসার চালাতে অত্যন্ত কষ্ট হয় বলে জানান,পুরুষদের যারা গ্রামে থেকে যান, তাঁদের অনেকেই জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষি বা মৎস্য চাষে কাজ করেন।
এখনও পানি সরবরাহে লবণাক্ততার ক্রমবর্ধমান মাত্রা অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করছে, কারণ কিছু গ্রামবাসী চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের করছে।
আমাদের সব সমস্যার মূল হলো নোনাপানি ও সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে ঘোষণা,ঘূর্ণিঝড় আইলার (২০০৯) পর থেকে নোনাপানি ধীরে ধীরে এই এলাকাকে মরুভূমি বানিয়ে দিয়েছে, বলছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রমজাননগর ইউনিয়নের গোলদ্বীপ গ্রামের বসাবসকারী মুজিবুর রহমান (৪৬)।
যেটুকু অল্প জমি ছিল তাতে একসময় ধান লাগাতাম। পুকুরে মাছ হতো,এখন লোনাপানির কারণে ধান চাষ করা যায় না। সবকিছু কিনে খেতে হয়, খাবার পানি ও,গরু-ছাগল কিংবা হাঁস-মুরগিও পুষতে পারি না, বলেন আটুলিয়া ইউনিয়নের নজরুল শেখ, এমন হাজারো অভিযোগ আর নীরব কান্না উপকূলের মানুষের আর্তনাদ যাহা দেখার নেই কেউ।
মন্তব্য