সব
ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী গোপাল পাল খুন ও সানকিপাড়া বাজারে রাজু খুনের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোতোয়ালি মডেল থানা, ১নং ফাড়ি পুলিশ ও ডিবি পুলিশ পৃথক অভিযানে শুক্রবার তাদেরকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু, রাম দা ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মোহাম্মদ আলী ও মোঃ নোমান ওরফে গলাকাটা নোমান। অতিরিক্ত পুলিশ (সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) রায়হানুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এ তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, গত ২১ ফেব্রুয়ারী মহুয়া কমিউটারের যাত্রী মোহনগঞ্জের গোপাল পাল স্ব-পরিবারে ঢাকা যাওয়ার জন্য ময়মনসিংহ রেল ষ্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন। ঘটনার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য রেলওয়ে ষ্টেশনের ৫ম প্লাটফর্মে গেলে ছিনতাইকারীর কবলে পরে। পরবর্তীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে পরিবারের লোকজনের কাছে আসলে পরিবার ও স্থানীয়দের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জবা রানী বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের নামে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় মামলা নং-৪, তারিখ-২২/০২/২০২৪, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
এ মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ আসামী গ্রেফতারে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা জেলা পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত আসামীকে সনাক্ত সহ গ্রেফতারের জন্য নির্দেশ দেয়। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ১ নং ফাড়ির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সহিদুল ইসলাম পিপিএম অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রায়হানুল ইসলাম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এবং কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে এ ঘটনায় বিবিধ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। শুক্রবার বিকালে পুলিশ পরিদর্শক সহিদুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে জানতে পায় ছিনতাইকারী খুনী কালিবাড়ি রোডের একটি পরিত্যক্ত বাড়ীতে ঝোপঝাড়ের ভিতর নেশা করছে।
উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গোপাল পাল খুনের আসামি মোহাম্মদ আলীকে নেশা করা অবস্থায় গ্রেফতার করেন। এ সময় তার দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ আলী হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি এবং চুরিসহ ৫ টি মামলা রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় সানকিপাড়া রেল গেইট মসজিদ মার্কেটের সামনে রাজু হত্যাকান্ডের আরেক ঘাতক নোমান ওরফে গলাকাটা নোমানকে ডিবির ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম সানকিপাড়া এলাকা থেকে শুক্রবার বিকালে গ্রেফতার করে। এর আগে বৃহস্পতিবার এ হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামি মোঃ ইব্রাহিম ও আল আমিনকে ডিবি পুলিশ নেত্রকোণার আটপাড়া থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের তথ্য মতে হত্যাকান্ড ব্যবহৃত রাম দা ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ। ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দী, ডিবির ওসি ফারুক হোসেন, কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেন, ১নং ফাড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সহিদুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য