সব
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ময়মনসিংহ নগরীর প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে মের্সাস রাজীব বেকারি। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। ঘটনাটি নিয়ে দফায় দফায় অভিযোগ দায়ের হলেও প্রতিকার না পাওয়ায় হতাশ ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অভিযোগ বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মের্সাস রাজীব বেকারিটি রুটি ও বিস্কুট কারাখানা চালিয়ে আসছে। এর ফলে কারখানা থেকে নির্গত হওয়া দূষিত ধোঁয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টসহ চর্ম ও চোখ জ্বালাপোড়া রোগে ভুগছে।
এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০২১ সালে ২৮ নভেম্বর ভুক্তভোগী কার্তিক পাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ওই বছরের পহেলা ডিসেম্বর তৎকালিন উপ-পরিচালক মিহির লাল দুই পক্ষের উপস্থিতিতে ঘটনার শুনানি করে অভিযোগের সত্যতা পান।
এরপর ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর উপ-পরিচালক মিহির লাল এক আদেশে বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহন না করে আবাসিক এলাকায় এই বেকারি পরিচালনার কারণে পরিবেশ দূষন হচ্ছে। যা পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। এই অবস্থায় দূষন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (চিমনি স্থাপন) কার্যকর করে আগামী তিন মাসের মধ্যে পরিবেশসম্মত স্থানে বেকারিটি স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়ায় হলো।
তবে দীর্ঘ সময়েও এই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কার্তিক পাল। এনিয়ে ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় শুনানি শেষে পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী রাজীব বেকারিটি বন্ধের আদেশ দেয় পরিবেশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই আদেশটিও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শীতল সরকার।
তিনি জানান, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এই বেকারিটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
জানতে চাইলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এখনো আমাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ক্ষমতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের বিভাগীয় পরিচালক (উপ-সচিব) দিলরুবা আহমেদ।
তিনি বলেন, দফায় দফায় শুনানি করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদেশ বাস্তবায়নের ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই এই বিষয়ে এনর্ফোমেন্টের জন্য সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
মন্তব্য