সব
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান- এই দুটি নাম একে অপরের পরিপূরক। একদিকে যেমন মাতৃত্বের মমতা, অন্যদিকে রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও সমর্থন। গত চার দশকে তাঁদের সম্পর্ক পারিবারিক গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে উঠেছে এক বিশাল রাজনৈতিক শক্তির উৎস। তারেক রহমান বহুবার বলেছেন যে, রাজনীতিতে তাঁর প্রথম ও প্রধান শিক্ষক তাঁর মা।
বিভিন্ন সময়ে মা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথাগুলো বিশ্লেষণ করলেও দেখা যায়, সেখানে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ এবং একজন রাজনৈতিক সহযোদ্ধার প্রতি অটুট আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার কারাবন্দী জীবন এবং অসুস্থতার সময় তারেক রহমানের বক্তব্যগুলো ছিল অত্যন্ত আবেগঘন। মায়ের মৃত্যুর পরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
তারেক রহমান মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩ মিনিটে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন পোস্ট দেন। এই পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য। আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে।
তারেক রহমানের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আমার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। অনেকের কাছে তিনি ছিলেন দেশনেত্রী, আপসহীন নেত্রী; অনেকের কাছে গণতন্ত্রের মা, বাংলাদেশের মা। আজ দেশ গভীরভাবে শোকাহত এমন একজন পথপ্রদর্শককে হারিয়ে, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় অনিঃশেষ ভূমিকা রেখেছেন।’
‘আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য। আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে; নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে।’
‘ত্যাগ ও সংগ্রামে ভাস্বর হয়েও, তিনি ছিলেন পরিবারের সত্যিকারের অভিভাবক; এমন একজন আলোকবর্তিকা যাঁর অপরিসীম ভালোবাসা আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়েও শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি বারবার গ্রেফতার হয়েছেন, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, সর্বোচ্চ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবুও যন্ত্রণা, একাকিত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও তিনি অদম্য সাহস, সহানুভূতি ও দেশপ্রেম সঞ্চার করেছিলেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে।’
‘দেশের জন্য তিনি হারিয়েছেন স্বামী, হারিয়েছেন সন্তান। তাই এই দেশ, এই দেশের মানুষই ছিল তাঁর পরিবার, তাঁর সত্তা, তাঁর অস্তিত্ব। তিনি রেখে গেছেন জনসেবা, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
মন্তব্য