সব
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, চাকরিতে স্বল্প সংখ্যক কোটা থাকতে পারে অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধিদের জন্য। অনগ্রসর বা আমাদের সাথে যারা সমান তালে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনা তাদের জন্য স্বল্প সংখ্যক কোটা থাকতে পারে। সেটা প্রথম ও দ্বিতীয় নয় সকল শ্রেণীর জন্য কার্যকর করা উচিত। বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, আমরা আস্থা রাখবো। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন, চিরদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে না। রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা আগামী প্রজন্মের জন্য সমতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে।
আজ বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, চাকরিতে কোটা থাকবে কি থাকবে না, বা কতটুকু থাকবে তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তা বাস্তবায়ন হবে প্রশাসনের মাধ্যমে। এটা হাইকোর্টে যায় কেন? এটা কি হাইকোর্টের এখতিয়ারে পড়ে? গেলো ২১ সালে আবার ২৪ সালে রায় হলো কেন? সেই রায়ে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল হলো। সরকার যেটা বাতিল করলো, এখন কথাবার্তায় মনে হচ্ছে ওই রায়ে সরকার খুব খুশি। এ কারণেই জনগণের ধারণা সরকার তখন কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে চায়নি। জনগণের চাপে বাতিল করেছিল। তাদের লোক দিয়েই মামলা করেছিল যাতে পুনরায় কোটা পদ্ধতি চালু করা যায়। যারা মামলা করেছিল সরকার তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছিল। এটা সাধারণ মানুষের সন্দেহ। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে সরকার কোটা পদ্ধতির বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখতে পারে। একারণেই সাধারণ পরিবারের ছেলেরা আন্দোলন থেকে পিছু হটছে না। বিচারাধীন কোন বিষয়ে কথা বলা যায় না। সংবিধানের কয়েকটি ধারার কারণে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের প্রধানের অধিনস্থ হয়ে গেছে। সংবিধানে কিছু অসামঞ্জস্য ও অসম্পূর্ণতা আছে। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সবসময় নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করে রাখা। আবার ১০৯ এ বলা আছে অধোস্তন বিচার বিভাগকে দেখাশুনা করবে উর্ধতন হাইকোর্ট দেখাশুনা করবে। ১১৬ তে বলা আছে রাষ্ট্রপতি তাদের প্রমোশন ও ট্রান্সফার করবে। একই কাজ দু’জনকে দেওয়া হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্টকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, হাইকোর্টে কথা শোনা হয় না। ৪৮ এ বলা আছে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর মতামত ছাড়া দুটি কাজ করতে পারবে। বর্তমান অবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর মতামত ছাড়া কিছু করতে পারে? আবার রাষ্ট্রপতি যা করে তা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করে করতে হয়। এটা হচ্ছে সংবিধানের দোষ। ৯৫ এর ২ এর ক, খ এবং গ বলা আছে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সাথে আলোচনা করে হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগ দিয়ে পারবে। তাকে ১০ বছর এপিলেড বিভাগে কাজ করতে হবে অথবা ১০ বছর বিচারিক কাজের সাথে যুক্ত থাকলেই হবে। একটা আইন করার কথা ছিল সরকার তা করেনি। এটাই হচ্ছে অসম্পূর্ণতা। তাই, প্রেসিডেন্ট যা করবে তা প্রধানমন্ত্রী করবে। তাই প্রধানমন্ত্রী হাইকোর্টের সকল নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। ফলে হাইকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর আওতার বাইরে যেতে পারছে না। বর্তমান সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কিছুদিন আগে বলেছিলেন, আগের একজন প্রধান বিচারপতিকে হেনস্তা করে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে কোর্টে একটি কথাও উঠেছিল কিছুই হয়নি। আমরা শতভাগ আস্থা রাখতে চাই বিচার বিভাগের উপর। গায়ের জোরে আর ভয় দেখিয়ে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা অর্জন সম্ভব না। আমাদের বিকল্প শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ বর্তমান সরকারকে চাচ্ছে না। বাংলাদেশের নির্যাতিত হচ্ছে, বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। দেশের মানুষ মুক্তি চায়, আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। কঠিন কিছু অর্জন করতে হলে ঝুঁকি নিতে হয় এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আমরা যদি প্রমাণ করতে পারি আমরা আওয়ামী লীগের পোষ্য নয়, তবেই জনগণ আমাদের সঙ্গে থাকবে।
আজকের এই দিনে আমাদের প্রিয় নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইন্তেকাল করেছেন। আজ তাঁর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। আমার তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাকে ক্ষমা করে বেহেস্তের সর্বোচ্চ স্থান দান করেন। পল্লীবন্ধুর সারাজীবনই নিয়োজিত ছিলেন জনগণের কল্যাণে। ছোটবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত দুরন্ত ও মেধাবী ছিলেন। ছাত্রজীবনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন হতেন একই সাথে সাহিত্য চর্চাও তিনি আগ্রহী ছিলেন। ছাত্র জীবনে সাহিত্য ম্যাগাজিন সম্পাদনা করতেন তিনি। তিনি যেখানেই ছিলেন সবাই তাঁকে এক নামে চিনতেন। সেনাবাহিনীতেও একদিকে কৃতি খেলোয়াড় ছিলেন। একই সাথে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সাথে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তখন শুধু বিএনপি’র কিছু সংখ্যক নেতা ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল ও আপামর জনগণ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। জনগণ আনন্দ উল্লাস করেছিল। তখন আওয়ামী লীগের মুখপাত্র দৈনিক বাংলার বাণী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে স্বাগত জানিয়ে শিরোনাম করেছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এটা ছাড়া আর কোনো গতান্তর ছিলনা। তখনকার আইন অনুযায়ী এটা হয়তো বৈধ ছিলনা। একটা দেশের মালিক যদি জনগণ হয় সেদেশের মালিকের প্রত্যাশা পূরণ যদি কোন আইনে অবৈধ হয় তাহলে সেই আইনটি ভুল। সেই আইনটি সঠিক আইন নয়। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে যে আইনে সেটি হচ্ছে প্রজাতন্ত্রের আইন। ৪ বছর দেশ পরিচালনার পরে নির্বাচন দিয়েছিলেন। এই সময় তিনি দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ন্যয় বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়েছিলেন। তাঁর সময় আইনের প্রতি হস্তক্ষেপ করা হতো না। আইনের চোকে সবাই সমান ছিল। ১৯৮৬ সালে তিনি নির্বাচিত হলেন তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময়কে দেশের মানুষ স্বর্ণযুগ মনে করে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ছিল, ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল। জনগণের কল্যাণে যা যা দরকার ছিল তিনি তা করেছিলেন। জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তিনি সব কাজ করতেন। তিনি ছিলেন গণতন্ত্রমনা, জনগণের প্রয়োজনে সকল দাবী পূরণে তিনি কখনো কার্পণ্য করেনি। উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে কোথাও যেন দূর্ণীতি না হয় সে ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বর্তমান সরকার বিশাল বিশাল অংকের বাজেট ঘোষণা করে। খুব অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি কখনই জ্বালানী তেলের উপর কর বসাতে চাননি। তিনি বলতেন, জ্বালানী তেলের দাম বাড়লে সমস্ত কিছুর দাম বেড়ে যাবে। এতে মানুষের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠবে। তখন পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেন ৭ টাকা লিটার ছিল। এলপিজি সিলিন্ডার ৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আপনি যা আজ ১০০ টাকায় কিনছেন তার ৬০ ভাগ সরকার নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ শূন্য, জিনিষপত্রের দাম লাগামহীন। এরশাদ সাহেব ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে বাজেট দিয়েও যমুনা ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। তাঁর জোগাড় করা টাকায় সময়মতোই যমুনা ব্রীজ সম্পন্ন হয়েছিল। উত্তরবঙ্গকে বৈষম্য মুক্ত করতে তিনি যমুনা ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পদ্মা ব্রীজের কথা বলা হয় নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে, এটা ভূয়া কথা। যদি বলা হয় নিজস্ব অর্থায়নে কোন প্রকল্প করা হয়েছে তাহলে, বলতে হয় সমস্ত প্রকল্পই নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে। আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে তো কোন প্রকল্প হচ্ছে না। উন্নয়নের জন্য আমাদের বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হয়। ঋন নিতে ব্যাংকগুলোকে খালি করে ফেলা হয়েছে। আবার ব্যাংকের টাকাও তসরুপ করা হয়েছে। সেটাও সরকারী দলের লোকজনই করেছে। বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হয় অনেক অনেক সূদে। বিদেশী ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারে পড়ে গেছে। আমাদের রিজার্ভ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। যেকোনো সময় রিজার্ভ শূণ্য হয়ে যেতে পারে। এখনই আমাদের অনেক দেশ ধার দিতে চাচ্ছে না। পদ্মা সেতুতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা ফেরত দিয়েছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সূদের হার ছিল শতকরা ১ ভাগ। সেই ঋণ না নিয়ে আমরা বিভিন্ন ব্যাংক ও বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েকগুন বেশি সুদে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এশিয়ান ডেভলেপমেন্ট ব্যাংক এবং আইএমএফও আছে। এখনো আমরা আইএমএফ এর কাছে টাকার জন্য ঘুরছি, বাহাদুরি কোথায়? শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে আমাদের বড় বাজেট দেখায় সরকার। এখন প্রতিটি মানুষের ঘাড়ে দেড় লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা। কাজের সুযোগ ছিল, ব্যবসার সুযোগ ছিল, এরশাদের সময় টেন্ডারবাজী ও চাঁদাবাজী ছিলনা। জিনিষপত্রের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল। রপ্তানির সব তথ্যের মধ্যে গড়মিল। একজন অর্থনীতিবীদ বলেছেন, ইলিশ মাছ উৎপাদনে আমরা নাকি চ্যাম্পিয়ন, তাহলে আমার মতো মানুষ বাজারে গিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে পারে না কেনো? ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন।
স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদেরর নির্বাচন ব্যবস্থা সঠিক ছিলনা। কেয়ারটেকারের সময় কিছুটা ভালো ছিল, এখন তো একেবারের নিম্নতম পর্যায়ে। ইলেকশনকে ইলেকশন বলা যায় না, বলা যায় সিলেকশন। ৯১ সালের নির্বাচনে এরশাদ সাহেব যেনো অংশ নিতে না পার সে চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু জনগণের চাপে তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়েছিল। তিনি কখনই নির্বাচনে পরাজিত হননি। তাই বলা যায়, জনগণ কখনই এরশাদ সাহেবকে প্রত্যাখান করেনি। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ অপপ্রচার চালায় যে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জনরোষে পদত্যাগ করেছে। বিরোধী দলগুলো যখন বলেছিল, ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচনে আসুন, তখন গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল হয়ে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। সব দল মিলে এরশাদ সাহেবকে ধংস করতে চেয়েছিল। বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সাহেব যখন রাষ্ট্রপতি তখন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাথে আমিও বঙ্গভবনে গিয়েছিলাম। তখন, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন, এটা বুঝেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একত্রিত হয়ে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি প্রতিষ্ঠান করে। এরশাদ সাহেবকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। এরশাদ সাহেবের রাষ্ট্রপতি শাসিত পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতি চালু করেছে। কোন অপবাদেই এরশাদ সাহেবকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। তিনি যখন অসুস্থ্য ছিল তাকে রক্ত দেয়ার জন্য লাখ লাখ মানুষ ভিড় করেছেন, তাঁর ৪টি জানাযায় লাখ লাখ মানুষের ঢল নেমেছিল। ইতিহাসে এতোবড় জমায়েত অনেকেই দেখেনি।
আমরা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করবো। তার মধ্যে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন, আইনসিদ্ধভাবে হাইকোর্টকে বিকেন্দ্রীকরণ, স্বাস্থ্যনীতি ও শিক্ষানীতি করতে চেয়েছিলেন, এগুলো আমরা করবো। আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে এগুলো আমরা সংযোতি করবো। আমরা কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবো। তিনি ঔষুধ নীতি করেছিলেন, কায়েমি স্বার্থবাদীদের জন্য তার মধ্যে অনেককিছু সংযোজন বিয়োজন করা হয়েছে আবার উপজেলা পদ্ধতি যেভাবে পল্লীবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন আমরা সেভাবেই করতে চাই। যারা উপজেলা পদ্ধতি বাতিল করেছিল জনগণের চাপেই তারা উপজেলা পদ্ধতি চালু করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু, উপজেলা পদ্ধতির মূল চেতনা ধংস করা হয়েছে। এখন উপজেলা পদ্ধতি হচ্ছে শাসনের মাধ্যমে শোষন এবং লুন্ঠন। যেটা বৃটিশরা ও পাকিস্তানীরা করেছিল। আমরা চাই শাসনের মাধ্যমে সেবা ও জবাবদিহিতা।
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে। বৃটিশ ও পাকিস্তানীদের বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতেই আমাদের মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। বৃটিশ ও পাকিস্তানীরা আমাদের মধ্যে একটি এলিট শ্রেণী তৈরী করে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল। এখন আওয়ামী লীগ এসে যা করেছে তাতে, একদিকে আওয়ামী লীগ আরেক দিকে দেশের জনগণ। ভাষাকে ব্যবহার করে পাকিস্তানীরা বৈষম্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তার প্রতিবাদেই একুশে ফেব্রুয়ারী জীবন দিয়ে আমাদের ভাইয়েরা বৈষ্যমের প্রতিবাদ করেছিল। আমাদের শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করার প্রতীক। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আইন করে সর্বস্তরে বাংলা প্রচলন নিশ্চিত করেছিলেন। স্বাধীনতার চেতনা ছিল বৈষম্যমুক্ত নিজেদের একটি দেশ। বৈষম্যহীন একটি নিজের রাষ্ট্র যেখানে ন্যয়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের স্মৃতিসৌধগুলো বৈষম্যমুক্ত এবং ন্যয়বিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধাদের তালিকা করে এরশাদ তাদের জন্য ভাতা সহ বিভিন্ন সহায়তার ব্যবস্থা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে দল করার কথা এরশাদ সাহেব ভাবেননি। এখন লাঠিয়াল বাহিনী বানানোর চেষ্টা চলছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করা ঠিক নয়, এটা আমাদের আবেগের জায়গা।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় রবিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (রমনা) ।
উক্ত স্মরণ সভায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি, সিনিয়র কো- চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি,পাটির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য- এস এম ফয়সাল চিশতী, শেরীফা কাদের, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার, রানা মোহাম্মদ সোহেল মেজর (অঃ), মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল আলম রুবেল।
চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা- মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস-চেয়ারম্যান – আহসান আদেলুর রহমান, মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব -গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মোঃ শামসুল হক,
সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা মহসীন সরদার, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মহিলা পাটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আক্তার, কৃষক পাটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী জামাল, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর সিকদার লোটন, সাংস্কৃতিক পাটির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন সৈনিক পাটির আহ্বায়ক মেজর অঃ আনিসুর রহমান, শ্রমিক পাটির সভাপতি একেএম আশরাফুজ্জামান খান, তরুণ পার্টি আহ্বায়ক মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, মৎস্যজীবী আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম
মন্তব্য