সব
নিষিদ্ধ ঘোষিত আল-কায়েদার আদর্শে উদ্বুদ্ধ ৬ হিজরতকারীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের (সিটিটিসি) সিটি ইন্টেলিজেন্স এ্যানালাইসিস ডিভিশন ।
রোববার (১ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো আব্দুর রব, মোঃ সাকিব, মোঃ শামীম হোসেন, মোঃ নাদিম শেখ, মোঃ আবছার ও মোঃ সাইদ উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে।
আজ সোমবার (২ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) সকাল ১০:১৫ টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) বলেন, আব্দুর রব কোরআনে হাফেজ ও কওমী মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন। ২০১৯ সালের জুন মাসে সৌদি-আরব চলে যান। সেখানে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হন। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্রধরে সাইদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ আরও কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়। গ্রেফতারকৃত আব্দুর রব সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে। সে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ, প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো।
তিনি আরো বলেন, তাদের অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশী সহযোগীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সে অডিও-ভিডিও কলে তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। পরবর্তীতে সেই সদস্য লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশী এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। তাদের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং গ্রহণ করবে। পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।
সিটিটিসি অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহে সবাইকে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ করে। পরে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যায়। গ্রেফতারকৃত আবছার ও স্থানীয় সহযোগী তাদেরকে টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। আব্দুর রব যথাসময়ে দেশে আসতে না পারায় তারা টেকনাফের বাসায় অবস্থান করে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর মাসে আব্দুর রব দেশে আসলে তার সহযোগী শামীম ঢাকায় এয়ারপোর্ট থেকে তাকে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী তাদের অন্য সহযোগীর ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায়। দুদিন পরে তারা সাকিবদের সাথে মিলিত হয় এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন ভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ করে দল গঠন করে। তারা স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। তারা টেকনাফে হিজরত করে।
সিটিটিসির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
মন্তব্য