সব
সারাদেশের আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে ঠিক তেমনি পালিয়ে বা আত্মগোপনে রয়েছে ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগের নেতারাও। তবে বীর দর্পে তৃণমূলের কর্মীরা দিয়ে যাচ্ছে হুংকার। যেন শুধু অপেক্ষার পালা এইতো চলে আসছে সৈরাচার ফ্যাসিস সরকারের শেখ হাসিনা।
আবার অনেকেই ঘাপটি মেরে থেকে আধিপত্য বিস্তার লাভের আশায় অন্যান্য দলের নেতাদের সাথে চলছে লেয়াজু ভিত্তিক রাজনীতির নামে মাঠে থাকার চেষ্টায়। সুযোগ পেলেই রাজনীতির বিষাক্ত ছোবলের শিকার হতে পারে ভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা।
সুত্র মতে, পালিয়ে বা আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাদের ইশারায় রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে নতুন নতুন সামাজিক সংগঠনের নাম আত্মপ্রকাশ পাচ্ছে। সেই সংগঠনগুলোর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতায় বিএনপি’র নেতাদের প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি বা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত রাখার টার্গেট রয়েছে আওয়ামী লীগের বলিষ্ঠ শক্তিধর তৃনমুল নেতাকর্মীদের। যেমনটি হয়েছে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস সরকারের আমলে হাইব্রিড নেতাদের ক্ষেত্রে।
সরকার পতনের পর ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতারা আত্মগোপনে থাকলেও ব্যবসা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী হাইব্রিডরা।শেখ হাসিনার ফ্যাসিস সরকারের শাসনামলে গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে হাতে রেখে বিএনপি, জামায়াতের নেতাদের দমন নিপীড়ন করতে একের পর এক জ্বালাও পোড়াও নাশকতার মামলা দিয়ে ধমিয়ে রেখেছেন।
বিএনপি জামায়াতের নেতারা তখন মাঠে নামতে না পারলেও আওয়ামী লীগ তৃনমুলের নেতাকর্মীরা বিএনপি জামায়াতের ছদ্মবেশে জ্বালাও পোড়াও অগ্নিসংযোগ করে নাশকতার মামলা ঠুকে দিত বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের নামে।
আবার অনেক সময় ধরা পড়ে নাশকতার মামলা হলে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠতেন। এক্ষেত্রে অনেক পাতি নেতারা বলির পাঠাও হয়েছে।
সরে জমিন তদন্তে উঠে এসেছে, ময়মনসিংহ বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় আত্মপ্রকাশ করেছে “বন্ধু মহল” বন্ধু ক্লাব, জীবন গঠন, নতুন জীবন নামের সংগঠন। মুলত এই সংগঠনগুলোকে সামাজিক সংগঠন হিসেবে দাবী করলেও এরা আওয়ামী লীগের তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব নামের সংগঠনগুলোর কাজ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেবলই আওয়ামী রাজনীতির ভিত শক্তিশালী করার কৌশল মাত্র।
ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলা চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের রাজগঞ্জ বাজারে সাবেক এমপি মোহিত উর রহমান শান্ত’র অনুসারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শাহিন, গফরগাঁওয়ের সাবেক এমপি ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল’র অনুসারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এম এ কাউসার, সাবেক এমপি শরীফ আহমেদের অনুসারী সাখাওয়াত (বন্দুক সাখা) নকলায় শামিম আহম্মেদ (পিস্তল শামি) মুক্তাগাছা কে এম খালিদের অনুসারী (লেংড়া শামিম)সহ তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী কিশোর গ্যাংদের সদস্য করে “বন্ধু মহল” বন্ধু ক্লাব, জীবন গঠন নামের সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। সংগঠনে উদ্বোধনে অতিথি হিসেবে টার্গেট করা হচ্ছে বিএনপি নেতাদের। তবে বেশ কয়েকটি সংগঠনের অনুষ্ঠানের দাওয়াত নাখোশ করেছে বিএনপি নেতারা।
ময়মনসিংহ সদরের চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের একাধিক সুত্র জানায়, সদর ৪ আসনের প্রভাবশালী সাবেক এমপির অনুসারী সামান্তা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শাহিন শেখ হাসিনার ফ্যাসিস সরকারের আমলে ইট, পাথর, বালি ব্যবসার আড়ালে ঘরে তুলে কিশোর গ্যাং। বিএনপি নেতাকর্মীদের নাশকতা মামলায় ফাঁসাতে নিজেই নাশকতা করে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানায়, বিএনপি নেতাদের ফাঁসাতে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শাহিন নাশতায় অংশ গ্রহনের কারনে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা রুজু হয়। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হাত ধরে সাবেক এমপি মোহিত উর রহমান শান্ত’র হাতে ফুল দিয়ে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে জোড় তদবির করেন।
ফ্যাসিস সরকার পতনের সাথে সাথে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নিজেকে আবারও বিএনপি মতাদর্শী হিসেবে দাবী করেন। এতে স্থান না পেয়ে সামান্তা এন্টারপ্রাইজ এবং বন্ধু ক্লাবের আত্মপ্রকাশ করে ব্যাপক জাঁকযমক আয়োজনে তা উদ্বোধন করে।
অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাকর্মীরা সাড়া না দেওয়ায় প্রধান অতিথি চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব ফারুকুল ইসলাম রতনের উপস্থিতিতে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ফয়সাল আহমেদ উদ্বোধন করেন। রাতে আয়োজন করা হয় বাউল গানের নামে কনসার্ট।
স্থানীয়রা জাতীয় সেবা ৯৯৯ এবং কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। এসময় পুলিশ কনসার্ট বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শাহিন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস সরকারের পতনের পর ময়মনসিংহে ভয়ংকর খলনায়ক “আ”লীগ নেতা আব্দুল মজিদ” শিরোনামে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে স্থানীয় এক সাংবাদিককে সাহেব কাচারি বাজারে দেখামাত্র প্রকাশ্য উঠিয়ে নিয়ে মারধরের হুমকি প্রদান করে। পরে স্থানীয় সাংবাদিক ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি নং-৩৯১ তারিখ ০৩/০৯/২০২৪ইং।
এর আগে “নিজের চরকায় তৈল দাও” শিরোনামে একটি স্কুল, মাজারের অনিয়ম দুর্নীতি ও এলাকায় চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকের পথরোধ করে তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে হামলা করে হাত পা গুড়িয়ে দেয়। কোতোয়ালি মডেল থানা মামলা নং-৯৮(৩)২০২১ইং।
চলমান…।
মন্তব্য