সব
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থাকা অবস্থায় চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রশাসন তাকে ওএসডি করেছিল। মন্ত্রণালয়ের একাধিক প্রকল্পে টেন্ডার দুর্নীতি, অতিরিক্ত বিল উত্তোলন, ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে তিনি আলোচনায় আসেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণও মেলে। এরপর যথারীতি তাকে ওএসডি করে সরিয়ে রাখা হয়।
তবে ঘটনা সেখানেই শেষ হয়নি। ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে আবার দায়িত্ব পান। এই পদে থেকেও তিনি দুর্নীতির একই ধারা বজায় রাখেন। ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়া, ফাইল আটকে রেখে সুবিধা নেওয়া, ভূমি সংক্রান্ত অনুমোদনে উৎকোচ নেওয়া ছিল তার নিয়মিত চর্চা।
এরপর তার প্রশাসনিক যাত্রার নতুন অধ্যায় শুরু হয় বিআইডব্লিউটিসিএর চেয়ারম্যান পদে। যোগদানের পরপরই সেখানে শুরু হয় পরিকল্পিত লুটপাট। রাষ্ট্রীয় লঞ্চ মেরামত, কেনাকাটা ও উন্নয়ন ব্যয়ে বড় অঙ্কের দুর্নীতি হয়। পুরোনো নৌযান মেরামতের নামে বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ আত্মসাৎ করেন তিনি। অফিসে নিজস্ব লোক বসিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে নিয়োগ থেকে পদোন্নতিতে পর্যন্ত ঘুষ ছাড়া কিছু হয় না। যাত্রীসেবা কার্যক্রমের বিভিন্ন চুক্তিতেও রয়েছে অস্বচ্ছতা ও লেনদেনের গন্ধ।
তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ারও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় তার নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে প্রাসাদসদৃশ ভবন, গাড়ির বহর, বিদেশ সফরের খরচ, সন্তানদের বিদেশে পড়ালেখার ব্যয়সহ বিভিন্ন জায়গায় মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। যার অধিকাংশই সরকারি চাকরি থেকে অর্জিত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। নানা মাধ্যমে জানা গেছে, তিনি ঘুষ ও লুটপাটের টাকায় একটি প্রভাবশালী চক্রের ছায়ায় এই সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
একজন কর্মকর্তার সীমাহীন লোভ ও লুটপাট কেমন হতে পারে—তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সেই প্রমাণ বহন করে। প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও বিচারহীনতার সুযোগে তিনি বারবার ফিরে এসেছেন, বদলেছেন পদ, কিন্তু বদলায়নি তার দুর্নীতির ধারা।
মন্তব্য