সব
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে মনোনয়ন দ্বন্দ্বে হামলা-আগুন লুটপাট ও ট্রেনে নাশকতা করার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এর আগে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাবিলদার আরিফ রব্বানী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে রেললাইনের ২০ ফিট লাইন কেটে সরিয়ে ফেলায় ‘অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি কোচ লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনায় ২০ থেকে ২৫ জন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৯৭৪ ধারায় ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পৌর শ্রমিক দলের সাবেক আহ্বায়ক আল আমিন জনিও বাদী হয়ে ২৫০/৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গফরগাঁও থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
হাবিলদার আরিফ রব্বানীর মামলার এজাহারে বলা হয়, দুষ্কৃতকারীরা রেললাইনের পাতের সংযোগস্থলের নাট-বল্টু খুলে আনুমানিক ২০ ফুট রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে রাখে। এর ফলে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ দুটি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। রেলের ক্ষতিসাধন ও যাত্রী সাধারণের প্রাণহানির উদ্দেশ্যে করা এই নাশকতার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় রাজনৈতিক যোগসূত্র টেনে এজাহারে দাবি করা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষে ময়মনসিংহ-১০ আসনের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে গফরগাঁও এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে আসছিল। এর আগেও তারা রেললাইনে মাটি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল।
মামলার বিষয়ে পৌর শ্রমিক দলের সাবেক আহ্বায়ক আল আমিন জনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তে গত শনিবার ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনে আক্তারুজ্জামান বাচ্চুকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা করেন। নাম ঘোষণার পর ওই দিন আমি মিষ্টি বিতরণ করি। মিষ্টি বিতরণের একপর্যায়ে এক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার অফিসে হামলা করে ও কযেকজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে।
এসময় অফিসের সামনে থাকা ৮ মোটরসাইকেলের একটিতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। একই সাথে অপর ৭ টি মোটর সাইকেল সন্ত্রাসীরা নিয়ে যায়। এরপর থেকে গফরগাঁও রেলস্টেশনে ভাংচুর, ট্রেন অবরোধ ও পৌর শহরসহ আশপাশের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ স্থানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পৌর শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। একই সাথে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনার বিচার চেয়ে আমি মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, মামলার পর ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য