সব
ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানায় ময়না নামের এক নারীর নিখোঁজের ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে ময়মনসিংহ সদর থানা পুলিশ (৩০ নভেম্বর) তাকে উদ্ধার করেছে। রমেশসেন রায় রোডের (পতিতা পল্লী) একটি ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ময়নাকে উদ্ধার করে পুলিশ তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করে।
উদ্ধারের সময় গণমাধ্যম কর্মীরা ময়নার কাছে জানতে চান, তাকে কেউ বিক্রি করে দিয়েছে কি না।
জবাবে ময়না বলেন,
“আমাকে কেউ বিক্রি করে নাই। স্বামীর অত্যাচারে আমি পালাইছি। মরিয়ম আপা আমাকে অনেক সহযোগিতা করছে, তার কোনো দোষ নাই।”
মরিয়মকে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন:
সাংবাদিক: আপনি বলেছেন, আপনাদের বাসায় কোনো ঝামেলা হয় না এর ব্যাখ্যা কী?
মরিয়ম: মেয়েদের এখানে কোনো অত্যাচার হয় না। তারা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে। থাকতে চাইলে থাকবে, না চাইলে বলবে আমি চলে যাব।
ময়নার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে মরিয়ম বলেন,
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাচ্ছিলাম। আমার এক ফ্রেন্ড ফোন দিয়ে বলল, তোমাদের এলাকায় একটা মেয়ে কান্না করছে। আমি কমলাপুর যাওয়ার পথে পরে আমি গিয়ে দেখি ময়না। জিজ্ঞেস করলাম বাসাবাড়িতে কাজ করবে কি না। তখন ময়না বলে, তার মা ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে এক লোকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। দুইদিন তাকে ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। পরে ছোট বোন দরজা খুলে দিলে সে পালিয়ে এসেছে।
মরিয়ম আরও বলেন, আমি তার মায়ের নাম্বার চাই। কিন্তু নম্বর বন্ধ ছিল। পরে ময়নার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করি। তাকে বলি ময়নার আম্মু কে একসাথে নিয়ে আসতে পারবে তুমি তার হাসবেন্ড সাথে করে নিয়ে আসো । তিনি শুধু বললেন, আচ্ছা বুঝেছি দরকার নাই সে যা মন চায় তাই করুক তারপর ফোন কেটে দেন।
এরপর তিনদিন পরে মরিয়ম ময়নাকে ঢাকায় পাঠান তার একজন পরিচিত সরকারি কর্মকর্তা দম্পতির বাসায়, যেখানে ১০ হাজার টাকা বেতনের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ময়না সেখানে থাকতে না চাওয়ায় মরিয়ম তাকে আবার ফিরিয়ে আনেন।
উদ্ধার প্রসঙ্গে প্রশ্ন
সাংবাদিক: ময়নাকে উদ্ধার করেছে কে?
মরিয়ম:তার মা গেছেন, স্যাররা(পুলিশ কর্মকর্তা) গেছেন। পরে আমাকে ডাকলে আমি যাই। গিয়ে দেখি ময়না বলছে, সে যাবে না। ময়না নিজেও বলেছে আমার আম্মু ঠিক আছে, আমি যাব না।
সাংবাদিক: আপনার বাসায় কতদিন ছিল?
মরিয়ম: ছয় দিন।
সাংবাদিক: ছয় দিনে তার আয়-রোজগার কেমন ছিল?
মরিয়ম জানান, ছয় দিনের মধ্যে পাঁচ দিন তাকে কোনো কাজ দিই নাই। আমি আগে বলেছি—ভালভাবে চিন্তা করো তোমার ভবিষ্যৎ। নাম লেখানোর দুইদিন পর কিছু আয় করেছে।
মানবিক কারণে তিনি ময়নাকে আশ্রয় দিয়েছেন উল্লেখ করে মরিয়ম বলেন।
মানবিক জায়গা থেকে তাকে রেখেছি। কেউ দোষ দিলে আমার নামে দিন। আমি কাউকে দোষ দিই না।
সাংবাদিক: আপনি কার ঘরে থাকেন?
মরিয়ম: আমি নিজের ঘরেই থাকি। আল্লাহ আমার ভাগ্যে যা লিখেছেন তাই হবে। আমার কারণে কারো ক্ষতি আমি হতে দেব না।
মন্তব্য