সব
দেশের বিভিন্ন স্থানে পরপর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সম্ভাব্য নাশকতা বা হামলার আশঙ্কায় সারাদেশে পুলিশের সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। ইতোমধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারাদেশের সব কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন) এলাকায় বাড়তি নজরদারির নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার পর মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা সম্ভাব্য হামলা বা অঘটন ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার মৌখিক নির্দেশনা পান।
নির্দেশনা পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুন লাগার ঘটনার পরই মৌখিক নির্দেশে দেশের সব কেপিআই এলাকায় অতিরিক্ত টহল ও নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার করা হয়। জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তদারকিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে সারা বছরই নির্দেশনা থাকে। কেপিআই এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে।’
দেশের ‘কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন’ বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহকে সংক্ষেপে কেপিআই বলা হয়। বর্তমানে সারাদেশে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ ভবন, বিমানবন্দর, সচিবালয়, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কারাগার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মোট ৫৮৭টি কেপিআই রয়েছে। এসব স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০১৩ সালের সংশোধিত নীতিমালায় নিয়মিত টহল, প্রতিবেদন পাঠানো, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, যানবাহন তল্লাশি আয়না (ভেহিকেল সার্চ মিরর) ও লাগেজ স্ক্যানার ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে।
এর আগে, শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত। আমরা সকল নাগরিককে আশ্বস্ত করতে চাই। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
এছাড়া নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই। যদি এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হয় এবং এর উদ্দেশ্য হয় জনমনে আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টি করা, তবে তারা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের বিবেচনা ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব।
অন্তর্বর্তী সরকার আরও জানায়, বাংলাদেশ অতীতেও বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। আমরা ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
মন্তব্য