সব
দেশের অষ্টম বিভাগ ময়মনসিংহে আনন্দ-বেদনা আর উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।এই বিসর্জনের মধ্যদিয়েই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয়েছে।
আগামী বছর ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে ভক্তরা অশ্রুসজল নয়নে বৃহস্পতিবার দুর্গতিনাশিনী দেবীকে বিদায় জানান।
দুর্গোৎসবের শেষ দিনে মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শাস্ত্রীয় বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
আর্যধর্ম জ্ঞানপ্রদায়িনী সভার উদ্যোগে শহরের দুর্গাবাড়ি মন্দির থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে বিজয়ার শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতাউল আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আগমন করেন। সঙ্গে ছিলেন তার দুই কন্যা লক্ষ্মী ও সরস্বতী এবং দুই পুত্র গণেশ ও কার্তিক। কয়েকটি দিন পূজারি, ভক্ত ও দর্শনার্থীরা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। এর ফলস্বরূপ পৃথিবী শস্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। তবে এবার দেবী স্বর্গলোকে গমন করেন দোলায় (পালকি) চড়ে, যার ফলাফল হিসেবে মড়ক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ এবং মহামারির আশঙ্কা থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।
প্রতিমা বিসর্জন যাত্রায় নানা বয়সের ভক্তরা নেচে-গেয়ে অংশ নেন। এসময় শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর ঢোলের তালেতালে দেবীকে বিদায় জানানো হয়।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের কাচারী ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন প্রত্যক্ষ করেন বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ।
ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা নেচে-গেয়ে, সিঁদুর খেলে ও রং ছিটিয়ে প্রতিমা নিয়ে কাচারী ঘাটে যান এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের জলে বিসর্জন দেন। জেলায় ১৩টি উপজেলায় পারিবারিক ও সার্বজনীন মিলিয়ে মোট ৭৮১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের কাচারী ঘাট এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাজারো ভক্ত-শ্রদ্ধালু ঢাক-ঢোলের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে তাদের দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গাকে বিদায় জানান।
মন্তব্য