মৎস্য খাতের বড় সরকারি উদ্যোগ ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্প। উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে নেয়া প্রকল্পটিতে অডিট অধিদপ্তর ২৫৮ কোটি টাকার গুরুতর আর্থিক অনিয়ম পেয়েছে।
অডিটের তথ্যমতে, প্রকল্পের বড় আর্থিক অনিয়মগুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজে ডিফার্ড বার ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে ঠিকাদারকে ৪৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা দেয়া, খালের মাটি খননের অতিরিক্ত উচ্চতা দেখিয়ে বিল পরিশোধ করার মাধ্যমে সরকারের ১৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা ক্ষতি করা, অনুমোদন ছাড়া মূল বিশেষজ্ঞ পরিবর্তন করে আরডিপিপি বরাদ্দ থেকে অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় করা, কাজ সম্পাদনের ভুয়া তথ্য দিয়ে ঠিকাদারকে তিন কোটি টাকা আর্থিক সুবিধা দেয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া, অপ্রয়োজনীয় পরামর্শককে বিল পরিশোধ, একই কাজের জন্য দু’বার বিল পরিশোধ, আর্থিক বিবরণীতে ৩৭ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা অতিরিক্তভাবে দেখানোর মতো নানা অনিয়ম করা হয়েছে। সমর্থনযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্যাংকের হিসাব বিবরণীতে ৪৮ কোটি ৫০ হাজার টাকার ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চলে মৎস্য জরিপের মাধ্যমে চিংড়ি এবং তলদেশীয় ও ভাসমান প্রজাতির মৎস্যের মজুত নিরূপণ কর্মসূচি জোরদারকরণ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংস্থার সামর্থ্য বৃদ্ধিপূর্বক বিজ্ঞানভিত্তিক টেকসই মৎস্য মজুত সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, বাণিজ্যিক ও ক্ষুদ্রায়তন মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন অধিকতর কার্যকর পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি (এমসিএস) পদ্ধতির বাস্তবায়ন, উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্য আহরণ ও উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট অবকাঠমো উন্নয়ন এবং উৎপাদিত মৎস্যের ভ্যালু চেইন উৎকর্ষ সাধন ও অপচয় হ্রাস করা, উপকূলীয় জেলাগুলোয় ক্লাস্টার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা, মৎস্য মজুত পুনরুদ্ধার এবং উপকূলীয় মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি হাতে নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য