সব
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাওন কাবী রিজা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের একাধিক সূত্র।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে তাকে আটক করে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ। বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে তাকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, আটক থাকা অবস্থায় থানায় শাওন কাবী রিজাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে শাওন কাবী রিজাকে বলতে শোনা যায়, আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল, ‘তুমি আসো।’ পরে আমি গেলাম। এরপর হঠাৎ করে আমাকে পেছন থেকে ধরে থানায় নিয়ে গেল। থানায় নেওয়ার পর ৬-৭ জন মিলে আমাকে পিস্তল দেখিয়ে ইচ্ছেমতো মারধর করতে থাকে। পরে তারা আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে বলে, ‘তিনি আমাদের বড় অফিসার, ওনার কাছে সব বলো, আমরা কি তোমাকে মারধর করেছি?’ ভয়ে আমি তখন বললাম, ‘না।’
তিনি আরও বলেন, তারা আমাকে বলে, ‘তোর মতো ছাত্রদল নেতাকে মেরে ফেললেও কিছু হবে না।’ এরপর আমাকে সেলে আটকে রাখল এবং সারাদিন কিছু খেতে দিল না। পরে আমাকে চালান করে দেওয়া হলো।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, শাওন কাবী রিজা ক্ষত-বিক্ষত শরীর দেখিয়ে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলছেন, ‘ভাই দেখেন, আমারে কি মারা মাইরছে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজ দুপুরে ছাত্রদল সভাপতির জামিন হয়েছে। এর আগে গতকাল তাকে থানায় মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গত রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানের নেতৃত্বে একটি দল পাঠানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন। পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মমিনুল ইসলাম জিসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছাত্রদল সভাপতির জামিন হয়েছে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের নিয়ে যাচ্ছি।
মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, থানায় মারধর করা হয়েছে বলে শুনছি। শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে জানাতে হবে।
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আমানউল্লাহ আমান ফেসবুকে লিখেছেন, আমাদের এতো সহযোদ্ধারা জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। অবশিষ্ট সহযোদ্ধাদের জুলুমের শিকার হওয়ার জন্য নয়। অবিলম্বে পুলিশ বাহিনীতে এখনো বিদ্যমান ফ্যাসিবাদের দোসরদের অপসারণ করতে হবে।
মারধরের বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক তথ্য যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য