সব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পৃষ্ঠপোষক বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সাম্প্রতিককালে জামায়াতের কর্মকাণ্ড দেখে মনে করতে পারেন তারা একলা চলো নীতিতে আছেন। ভাবছে ইতোমধ্যেই তারা ক্ষমতায় চলে আসছে। এখন তাদের অবস্থাটা এই পর্যায়ে আছে। সুতরাং আমরা মনে করিনা যে এখন আমরা ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতায় আনার মালিক জনগণ। একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন আমরা চাই এর বাইরে আমাদের আর কোনো কথা নাই। জামায়াতের রাজনীতি জামায়াত করবে আমাদের রাজনীতি আমাদের করতে হবে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের বেগম খালেদা জিয়া গার্লস স্কুল এন্ড কৃষি কলেজ মাঠে আয়োজিত শাপলাকুড়ি ট্রফি-২০২৫ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জিয়া শিশু অ্যাকাডেমির আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৪ বালিকাদের ফুটবল ও ভলিবল টুর্নামেন্ট শাপলাকুড়ি ট্রফি-২০২৫ আয়োজন করা হয়।
বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জামায়াত একটি দল, বিএনপিও একটি দল। দুইটি দলের রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন। বিএনপির মূল মন্ত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র। আপনারা জানেন জামায়াত ইসলাম জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে না। তার দল তার, আমার দল আমার। রাজনীতিতে আন্দোলন সংগ্রামে কখনও কখনও কৌশলগত কারণে অর্থাৎ আন্দোলনের জন্য ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে অনেক দল এক সঙ্গে থাকে।
তিনি বলেন, শুধু জামায়াত আমাদের সঙ্গে ছিল কারণ অনেক দল ছিল আমাদের সঙ্গে ছিল তাই। আমাদের প্রায় ২২ থেকে ২৩ টি দল ছিল। আমরা ২৭ দফার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আরও অন্যান্যদের পরামর্শে ৩১ দফার মধ্য দিয়ে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনটাকে সফল করার জন্য আমাদের সাথে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল প্রায় ৬২টি রাজনৈতিক দল। কিন্তু গত ৩ বছর যাবত আমাদের যুগপৎ আন্দোলন চলছে হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জোট আন্দোলন চলেনায়। সুতরাং যুগপৎ আন্দোলন যখন হয়েছে তখন ধরেই নিতে হবে সেটা জোট না। এখন আমাদের জোট না। আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছি, এখনো দিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং আরেকটা জিনিস হল যে জামায়াতের রাজনীতি একটা, আমার রাজনীতি একটা। আর জামায়াতের সাথে আমার জোট নাই, জামায়াতের সঙ্গে ছিল যুগপৎ। সুতরাং সেখানে এটা নিরসন হওয়ার কিছু নাই। আর এটা দেখে দূরত্ব আছে সেটা বোঝার দরকার নাই
ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক এবং সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, সীমান্তে হত্যাটা তো অনবরত চলছে। আর সীমান্ত হত্যার ওপরে প্রতিবাদ হয় না এ কথাটা সঠিক না। কারণ হত্যাকাণ্ডকে আমি কখনোই স্বীকার করতে পারব না। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য বিগত সরকারের মতো আমার দেশের অস্তিত্ব স্বার্থ বিসর্জন দেওয়ার মানসিকতা বিএনপির নাই। ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সম্পর্ক থাকতেই পারে থাকবেই। অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমার সম্পর্কের দরকার সেটিও থাকবে। সেই সম্পর্ক হবে সমতার সমমর্যাদার ভিত্তিতে। অর্থাৎ আমি আমার স্বার্থ ন্যাশনালের ইন্টারেস্টকে বিসর্জন দিয়ে নয়। সে কারণে আজকে আমার জাতি আমার বর্ডারে হত্যা হবে তাকে আমি এড়িয়ে যাব ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক করার জন্য এ কথাটা না ভাবাই ভালো।
ভারতের সঙ্গে বিগত সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১৬ বছর এত গুলি আসলো একটা গুলি ফেরত দিল না কেন বর্ডার গার্ড। তারা কেন অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করলো। বর্ডারে যদি আমি পালটা গুলিই না করতে পারি তাহলে আমি কোটি কোটি টাকা খরচ করে গুলি কিনি কেন? আমি বহুবার বক্তব্য বলেছি বর্ডার গার্ড যদি বিএসএফ এর পালটা জবাব না দিতে পারে তাহলে তাদের রাখার দরকার কি। কিছু চৌকিদার আর হারিকেন দিয়ে দ্বারা করিয়ে রাখলেই তো হয়, আমাকে তাদের পিছনে পয়সা খরচ করতে হবে কেন?
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে তো কূটকৌশল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আছে। পতিত সরকার পতিত হইলেও তাদের ভাবনা তো পতিত হয় নায়। তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নাই। আমার বিশ্বাস একটাই পতিত সরকার অর্থাৎ ৭ই নভেম্বর পরাজিত শক্তি আর একাত্তরের পরাজিত শক্তি যৌথভাবে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আর গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।
শাপলা কুড়ি ট্রফি-২০২৫ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ জিয়া শিশু অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক এম হুমায়ূন কবীর। এ সময় বরগুনা জেলা ও বেতাগী উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য