সব
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূইয়া নির্দেশনা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মাইন উদ্দিন এর তত্বাবধানে থানা পুলিশের একটি চৌকষ টিম অভিযান চালিয়ে অর্ধ গলিত মিনারা খাতুনের লাশের হত্যা রহস্য উদঘাটন পূর্বক আসামী মোঃ রাজিব (৩০), পিতা- মোঃ আব্দুল লতিফ ওরফে লতে, সাং-উইনারপাড়, থানা- কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহকে ২০ জুন ২০২৪ তারিখে দুপুর ০২.৩০ ঘটিকার সময় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গাজীপুর জেলার হোতাপাড়া থানাধীন ফিরোজআলী কাজিরপাড়া এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয় তার হেফাজত হতে ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন (৩৫) এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সহ মোট ০৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মামলার ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন (৩৫) বাদী হালিমার মেয়ে হয়। বাদী হালিমার মেয়ে মিনারা খাতুনকে ০৬ বছর পূর্বে ত্রিশাল থানা এলাকায় আনিছুর রহমান এর সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে বাদীর মেয়ে তাহার স্বামীর সাথে সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করিয়া আসিতেছিল। বাদীর স্বামী রমজান আলী দীর্ঘদিন যাবত শারীরিক ভাবে অসুস্থ্যতায় ভোগিতেছিল। বাদীর মেয়ে প্রায়ঃশই তাহার স্বামীর বাড়ী হইতে বাদীর বাড়ীতে আসিয়া তার অসুস্থ্য বাবাকে দেখাশোনা করিত। ডিসিষ্ট মিনারার বাবা গুরুতর অসুস্থ্য থাকায় তাহাকে মোবাইল ফোনে সংবাদ দিলে ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন গত ১৪ জুন ২০২৪ তারিখ তাহার স্বামীর বাড়ী ত্রিশাল বালিপাড়া হইতে সকাল অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় বাদীর বাড়ীতে আসার কথা বলিয়া বাহির হয়। পরবর্তীতে বাদীর মেয়ের জামাই আনিছুর রহমান উক্ত তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় বাদীর ছেলে শাহবুর ইসলাম (১৮) কে ফোন করিয়া বাদীর মেয়ের সাথে কথা বলিতে চাইলে বাদীর ছেলে বলে যে, আপা তো আমাদের বাড়ীতে আসে নাই।
পরে বাদীর মেয়ের জামাই আনিছুর রহমান বাদীর মেয়ের নিখোঁজ এর বিষয়টি তাহাদের অবগত করিলে বাদী তাহার মেয়ের জামাইকে নিয়া তাহাদের আত্মীয় স্বজন সহ সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজাখুঁজি করিতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ১৬ জুন ২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকার সময় লোক মুখে জানিতে পারে যে, ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানাধীন উইনারপাড় সাকিনস্থ ধৃত আসামী রাজিব এর বসত ঘরের ভিতর একটি মেয়ের গলিত মৃত দেহ কোতোয়ালী থানা পুলিশ উদ্ধার করিয়াছে। পরে বাদী লোকজন নিয়া উইনারপাড় সাকিনস্থ রাজিবের বসত বাড়ীতে গিয়া স্থানীয় লোকজনের নিকট শুনিতে পান যে, কোতোয়ালী থানা পুলিশ লাশটি ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া গেছে। বাদী তাহার মেয়ের জামাই ও আত্মীয় স্বজনসহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়া বাদী হালিমা মেয়ে মিনারা খাতুনের মৃত দেহ সনাক্ত করেন। বাদীর ধারনা ইং-১৪/০৬/২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার পর হইতে ইং-১৬/০৬/২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামী/আসামীরা বাদীর মেয়ে মিনারা খাতুনকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ঘটনাস্থল ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানাধীন উইনারপাড় সাকিনস্থ ধৃত আসামী রাজিব এর বসত ঘরের ভিতর লেপ তোশক দিয়া মোড়াইয়া রাখিয়া দরজার তালা বন্ধ করিয়া রাখিয়াছে মর্মে বাদীর অভিযোগে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৩৬, তারিখ-১৭/০৬/২০২৪ ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন (৩৫) ধৃত আসামীর পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাদে ধৃত আসামী ডিসিষ্ট মিনারা খাতুনকে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়া দেখা করিতে বলিলে ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন সরল বিশ্বাসে ১৪ জুন ২০২৪ তারিখ বেলা অনুমান ১১:০০ ঘটিকার সময় ধৃত আসামী মোঃ রাজিব এর বসত বাড়ীতে আসে। তখন ধৃত আসামীর বসত বাড়ীতে তাহার পরিবারের অন্য কোন সদস্য না থাকায় আসামীর বসত ঘরের ভিতর নিয়া যায় ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন ৪,০০০/-(চার হাজার) টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখাইয়া ধর্ষণ করে।
এর আগে ধৃত আসামী তাহার পরিচিত পূর্বে আদালতে সোর্পদকৃত আসামী মোঃ জাকারিয়া হোসেন ওরফে রবিন ফকির (৩০), পিতা-মৃত শফিকুল ইসলাম, মাতা- মোছাঃ আফরোজা আক্তার, সাং-উইনারপাড়, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহকে মোবাইল ফোনে সংবাদ দিয়া তাহার বসত ঘরে নিয়া আসে এবং ধৃত আসামীর সহায়তায় মোঃ জাকারিয়া হোসেন ওরফে রবিন ফকির ও ডিসিষ্ট মিনারা খাতুনকে ধর্ষণ করে। একপর্যায় ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন ধৃত আসামীর নিকট টাকা চাহিলে সে টাকা না দিলে কথা কাটাকাটির একপর্যায় ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন ধৃত আসামীকে একটি চর মারে যাহার ফলে ধৃত আসামী মোঃ রাজিব ক্ষিপ্ত হইয়া ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন এর গলায় ধরিয়া ধাক্কা দিয়া খাটে ফেলে দেয় এবং গলায় চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যা করে। তখন আসামী মোঃ জাকারিয়া হোসেন ওরফে রবিন ফকির তাহার বসত ঘর হইতে বাহির হইয়া চলিয়া যায়। পরে ধৃত আসামী ডিসিষ্ট মিনারা খাতুন এর লাশটি গুম করার জন্য তাহার খাটের বিছানার তোশক ও চাঁদর দিয়া পেঁচিয়ে রেখে ডিসিষ্ট এর ব্যবহৃত ২ টি এবং তার নিজের ১টি মোবাইল ফোন নিয়া ঘরটি তালাবন্ধ করিয়া বের হইয়া চলে যায় মর্মে তদন্তকারী কর্মকর্তা (সেকেন্ড অফিসার) এস আই আনোয়ার হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আসামীকে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মন্তব্য