সব
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশের কতোই যে দুর্ভাগ্য!! এদেশের নির্বাচিত এমপি, ক্ষমতাসীন দলের কেউকেটা নেতা, দাপুটে জনপ্রতিনিধিরা মিলেমিশে স্বর্ণ চোরাচালান, হুন্ডি সিন্ডিকেট বানানোসহ ভাড়াটে কিলিং মিশন পর্যন্ত পরিচালনা করে, অবলীলায়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গরু মহিষের দেহে কোটি কোটি টাকার ডায়মন্ড ঢুকিয়ে সেগুলো অনায়াসে দেশে আনে তারাই।
দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা আর যশোহরের ছোট বড় আটটি সিন্ডিকেট বছরের পর এহেন সর্বনাশা কাজ কারবার ঘটিয়ে চললেও বাধা দেয়ার কেউ নেই। সেখানকার জেলা পুলিশ ও সীমান্ত প্রশাসনের অনেক কর্তা এসব সিন্ডিকেটের সক্রিয় কর্মী হয়ে কাজ করে থাকে। এর বাইরেও চরমপন্থী অস্ত্রবাজদের নিয়ে প্রতিটি সিন্ডিকেটের রয়েছে আলাদা আলাদা বাহিনী।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা আর অস্ত্রবাজ নিজস্ব বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই শত শত কোটি টাকার স্বর্ণ পাচার হয়, বিপরীতে আনা হয় ডায়মন্ড, অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদক।
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে ভারতে নিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই এসব তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
যোগ পনেরো আগে গড়ে তোলা এ মাফিয়া সিন্ডিকেটে তারা সবাই একীভূত ছিল। আজ স্বার্থ আর প্রভাবের দ্বন্দ্বে তারা পৃথক হয়েছে এবং একজন হয়ে উঠেছে আরেক জনের জানবাজ শত্রু। এসব বিবেচনায় একক কারণে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় এমপি আজিমের প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়নি, এর পেছনে একাধিক চক্রের সম্মিলিত উদ্যোগের বিষয়টি ভেবে দেখা জরুরি।
এদিকে এমপি আজিম আনারের হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য এরইমধ্যে ‘মাফিয়া দাদা’ সহ ‘বিশ্বাস চক্র’ অবিশ্বাস্য কায়দায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কোনো মূল্যে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসেবে চালিয়ে দেয়ার কিংবা ‘চরমপন্থী গ্রুপের দ্বন্দ্ব’ বলে প্রমাণের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে।
এই মহল এমপি আজিম হত্যার চলমান তদন্তের গতিপথও ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। এ লক্ষ্যে মাফিয়া সিন্ডিকেটটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য, দাপুটে ডেভেলপার ব্যবসায়ী রয়েছেন সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। তার মালিকানাধীন পত্রিকাসহ অনলাইনে হত্যাকাণ্ডের শিকার এমপি আজিম আনারকেই উল্টো দাগী অপরাধী বানিয়ে একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করে চলছে। পাশাপাশি একেক সময় একেক মহলকে দায়ী বলে ইঙ্গিতের মাধ্যমে তদন্তকারীদেরও বিভ্রান্তির ঘোরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত ‘সঞ্জীবনী গার্ডেনে’র আলোচিত ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন কোর্টচাঁদপুর এলাকার আক্তারুজ্জামান শাহীন। মার্কিন প্রবাসী হলেও শাহিনের কোটি কোটি টাকা পুঁজি ছিল স্বর্ণ, ডায়মন্ড, অস্ত্র, মাদক ও হুন্ডির কারবারে। তার নাম ঠিকানা জালিয়াতি করে ভাড়া নেয়া সঞ্জীবনী গার্ডেনের ফ্ল্যাটটি ছিল অপরাধীদের মিলনমেলা। সম্প্রতি হুন্ডি ও হীরা চোরাচালান কান্ডে তোলপাড় ঘটানো মডেল পিয়াসা, মৌ, মিশু চক্রও সঞ্জীবনী গার্ডেনে আখড়া বসিয়েছিল বলে তথ্য রয়েছে।
আসলে প্রভাবশালী চক্রের অভিন্ন সুতায় গাঁথা ভয়াল অপরাধগুলোর আদ্যোপান্ত উদঘাটন করা হয় না কখনোই। এ কারণে নিস্পত্বহীন অপরাধ চলতে থাকে,,,, চলতেই থাকে।
মন্তব্য