শেরপুরের নকলা উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের ৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুনরায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হলো। এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ২৮টি বিদ্যালয় ও ১৯টি মাদ্রাসাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিমের ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংগঠকগনের হাতে বই হস্তান্তর করা হয়।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বই হস্তান্তর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এদিন উপজেলার মোট ৪৭টি স্কুল-মাদ্রাসার জন্য ৮ হাজার ৯২৫ টি বই সরবরাহ করা হয়েূছে। এরমধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণী ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভাবে মোট ১ হাজার ৮৯০টি করে বই, অষ্টম শ্রেণী ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য জন্য আলাদা ভাবে মোট ১ হাজার ৭৮৫টি করে বই ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর জন্য মোট ১ হাজার ৫৭৫টি বই প্রদান করা হয়।এসময় স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিমের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পিন্টু কুমার, নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা-গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির মো. মোশারফ হোসাইন, প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক নূর হোসেন, তারাকান্দা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও সংগঠক জাহিদুল ইসলাম, ধদিয়ারচর নামাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও সংগঠক নাছির উদ্দিন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিসসহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সংগঠকগন উপস্থিত ছিলেন।তথ্য মতে, ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলার নকলা উপজেলাসহ মোট ২০টি উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। করোনা অতিমারীর কারনে কয়েক বছর এই কার্যক্রম বন্ধ থাকার পরে নতুন করে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি দেশের ৬৪ টি জেলার তিনশতাধিক উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায় শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় ২৫ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী উন্নতমানের বই পড়ার সুবিধা পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এ কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে।উপজেলার বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কার্যক্রম দীর্ঘ্যদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত পাঠ্য বই ছাড়া বাহিরের তথা জ্ঞান অর্জন মূলক বই পড়ার অভ্যাস ভুলে গেছিলো। পুনরায় এখন এই কর্মসূচি চালু হওয়ায় দেশের অগণিত শিক্ষার্থী পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির তালিকা ভূক্ত বিভিন্ন লেখকের অতিমূল্যবান বই পড়ার সুযোগ পাবে।পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির মো. মোশারফ হোসাইন এই কর্মসূচি স্থায়ী করনের দাবী জানানোর পাশাপাশি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আদর্শ, সমৃদ্ধ, মানবিক ও মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে এতে কারো কোন প্রকার সন্দেহ থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, যে যত বেশি বই পড়বেন, সে ততবেশি জ্ঞানী হবেন,আর জীবন হবে আলোকিত।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, দেশ ও জাতির মঙ্গলার্থে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি ভালো লেখকের লেখা শিক্ষণীয় বই সমূহ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর শিক্ষার্থীদের এই অভ্যাস গড়ার বিষয়ে প্রতিটি অভিভাবক ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মুহাম্মদ আব্দুর রশিদসহ অনেকে মনে করেন। চলমান স্কিমের তালিকা ভুক্ত বই সমূহ পড়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মূল্যবোধ সম্পন্ন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টজন মনে করছেন।