ময়মনসিংহে গোলাপজান রোডে নকশা বর্হিভূত বিল্ডিং কোড অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণে সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ উঠেছে। ময়মনসিংহ নগরীর কাঁচিঝুলি ১৩/খ গোলাপজান রোডন্থ ১০তলা বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনটির চতুর সীমানা নির্মাণ আইন অনুযায়ী কোন জায়গা রাখা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ইতি পূর্বে সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসন বিভাগ স্মারক নং-৪৬.২১.৬১০০.০০৪.১৮.০০০. ২২.১৩০৬ তারিখ ১০ আগষ্ট ২০২২ইং মোতাবেক ভবন নির্মাণ কর্তৃপক্ষকে নোটিশ ইস্যু করা হয়েছিল।
আজকের বসুন্ধরায় সংবাদ প্রকাশিত হলে পূণরায় স্মারক নং- ৪৬.২১.৬১০০.০০৪.১৮.০০০. ২২.১৩৩২ তারিখ ১৪ আগষ্ট ২০২২ ইং মোতাবেক সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত নির্মাণাধীন ভবনে সকল প্রকার কাজ স্থগিত রাখার জন্য বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের বিল্ডিং কোড আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ করার যেমন অনেক অভিযোগ রয়েছে, ইতি মধ্যে বেশ অনেক গুলো নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ করা হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে, সিলগালা ও তালা লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ভবন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্তে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করার প্রশংসা কুড়িয়েছেন সিটি কর্পোরেশন।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নগর পরিকল্পনাবিদ গৃহায়ন নির্মাণে নকশা অনুমোদন এর প্রথমিক নকশা তৈরীর কাজ গণপূর্ত অধিদপ্তর ও সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে নির্মাণ কাজ শুরু এবং বাস্তবায়নের কথা থাকলেও বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে ব্যক্তি মালিকানা এবং বিভিন্ন হাউজিং নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশনের বিল্ডিং কোড নিয়ম নীতিমালা উপেক্ষা করে যে যার মতো অধিক মুনাফা অর্জন করার জন্য ভবন নির্মাণে বেশী ব্যস্ত হয়ে পরেছেন কতিপয় সিন্ডিকেট। যাহার দরুণ ভুমির পরিমান ও সীমানা নীতিমালায় বিল্ডিং কোডের আইন অমান্যের হিরিক পরে গেছে। সেই সাথে অনুমোদিত নকশার ইনডোর, আউটডোরে ব্যাপক গরমিল করে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
জানা যায়, যাদের অর্থায়নে বিল্ডিংটি নির্মিত হচ্ছে এই বিল্ডিং নির্মাণ এর সাথে যুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে ড. মুহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান, মোহাম্মদ মতিউর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, শফিউদ্দিন শেখ, আব্দুল মান্নান সহ ১৭ জন শেয়ার হোল্ডারদের নাম পাওয়া গিয়াছে তাদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা, উঁচুমানের প্রফেসর,ব্যবসায়ী, ডক্টরেট ডিগ্রীধারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা পর্যায়ের লোকজনসহ, বিচার বিভাগীয় সম্মানীয় পেশায় নিয়োজিতরা রয়েছেন। যারা সমাজের জ্ঞানদানসহ আইন শৃংঙ্খলা রক্ষার কাজে যুক্ত তাঁদের দ্বারা আইন অমান্য করার মত ঘটনায় নগরবাসী বিস্মিত। নকশা বর্হিভূত বিল্ডিং কোড আইন অমান্য করার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমান বাবুল অভিযোগ করায় এই ভবন নির্মাণে জরিতদের মধ্যে একজন মিথ্যা বানোয়াট কাল্পনিক অভিযোগ আনয়ন করে সিনিয়র সাংবাদিক পরিবারের উপর থানা পুলিশে অভিযোগ করে হয়রানি করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন।
এছাড়াও আইন কানুন নিয়ম মেনে কাজ করতে বলায় ইতিমধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের সংশ্লিষ্টরা স্থানীয়দের হয়রানির শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। অথচ প্রতিবেশীদের বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
প্রতিবেশীদের নিজস্ব রাস্তা ব্যবহারে রয়েছে অনেক ঝুকি যে কোন সময় ঘটতে পারে র্দূঘটনা, নকশা বহিভূত অবৈধ নির্মাণ কাজ সপন্ন করার চেষ্টা করায় এ ভবন নির্মাণ সংক্রান্তে সিটি করর্পোরেশন প্যানেল মেয়র-২ ও সভাপতি, অভিযোগ নি¯পত্তি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির জনাব মোঃ মাহবুবুর রহমান দুলাল কর্তৃক স্বাক্ষরিত নোটিশ ইস্যু করেন।
নকশা ডিজাইন যাচায়-বাছায়ের জন্য আগামী ২২ আগষ্ট ২০২২ইং রোজ সোমবার বেলা ১২টায় সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে শালিশী বোর্ডের
সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন (মসিক) মুসলিম স্কুল রোড এলাকায় নকশা বহির্ভুত ভবন নির্মানের দায়ে ইতিপূর্বে একটি নির্মানাধীন ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয় সিটি কর্পোরেশন নগর পরিকল্পনা বিভাগ।
গত ১৪ জানুয়ারী নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস, সার্ভেয়ার সুরোজ্জামান, সুজন তরফদার, মোবাস্বের হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এ নির্দেশ দেন।
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব উল আহসান পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতে রাস্তায় নির্মান সামগ্রী রাখার দায়ে এ মালিককে একটি মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সিটি কর্পোরেশন সম্প্রতি জেলা স্কুল রোড এলাকায় নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণ করায় গত ১০ জানুয়ারী একটি ১৪তলা ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়। এছাড়া বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়।
অবৈধ ও নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জানা গেছে, কতিপয় সিন্ডিকেট সদস্যরা সিটি কর্পোরেশনের সাথে প্রতারণা ছাড়াও ট্রাফিক বিভাগ, গণপূর্ত, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ডিসি, সিভিল এভিয়েশন সহ অন্যান্য দপ্তরের অনুমোদনের তোয়াক্কা করছে না অনেকেই । এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে কি না প্রশ্ন উঠেছে নগরবাসীর ।
এ ব্যাপারে ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, আইন শৃংঙ্খলা কমিটি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারী প্রয়োজন রয়েছে বলে নগরবাসী মনে করে।