নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুরঃ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে কোরআনে হাফেজ মো. মাহবুবুর রহমান (২৪) লক্ষ্য অর্জনে এক পায়ে ছুঁটছেন। সে পরিবার কিংবা সমাজের বোঝা নয়; হতে চান সম্পদ। অবিরাম চেষ্টায় প্রতিবন্ধী হয়েও সফল। তিনি পড়েন কলেজে এবং মাদ্রাসায়। খতিব জামে মসজিদের। পাশে দাঁড়ান প্রতিবন্ধীদের।
প্রতিবন্ধী মাহবুব উপজেলার ইকরা হাফেজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক এবং ইসলামি ফাউন্ডেশনের সহজ কোরআন শিক্ষার শিক্ষক। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে ইসলামের ইতিহাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। একই সঙ্গে পড়ছেন হাজিরহাট হামেদিয়া কামিল মাদ্রাসার ফাজিল তৃতীয় বর্ষে।
এরআগে তিনি সাহেবেরহাট মাদ্রাসা থেকে কোরআনে হাফেজ হন। চর জগবন্ধু ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করেন। বর্তমানে ইমামতি করছেন শহিদনগর রাস্তার মাথা জামে মসজিদে। গত এগারো বছর ধরে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়ান। লাঠি ভর করে এক পায়ে চলা মাহবুব স্বপ্ন দেখছেন কলেজ শিক্ষক হওয়ার।
মাহবুব উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা। লক্ষীপুর জেলা জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। তিনি নিবন্ধিত প্রতিবন্ধী। সরকারি ভাতা পান।
স্থানীয়রা জানায়, কোরআনে হাফেজ মাহবুব এক পায়ে লাঠি ভর করে হাটেন। প্রতিবন্ধী হয়ে অন্য প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতায় পাশে দাঁড়ান। এ পর্যন্ত ৩৯জন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার দিয়ে সহযোগীতা করেছেন।
হাফেজ মাহবুবুর রহমান বলেন, মা-বাবার ঋণ শোধ করা যায় না, আমি তাদের কাছে অনেক বেশি ঋণি। মা-বাবা পাশে আছেন বলেই এক পা নেই তা অনুভব হয় না। তাদের দু’জনের প্রচেষ্টায় এত দূর এসেছি, বেঁচেও আছি। এখন স্বপ্ন দেখছি কলেজ শিক্ষক হওয়ার। পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করেন বলে জানান।
মাহবুবের বড় ভাই শিক্ষানবিশ আইনজীবী ফখরুল ইসলাম মাহমুদ জানান, সাড়ে তিন বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার এক পা অবস হয়ে যায়। চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি। তাকে এক পায়ে লাঠি ভর করে হাটতে হয়।
কমলনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, মাহবুবের এক পা নেই। তবে তার আছে মনোবল। ইচ্ছে শক্তি ও প্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধী হয়েও আজ সে অনেকের চেয়ে সফল। সে পরিবারের বোঝা নয়, বারণ সম্পাদ।