বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাড়ি দিনাজপুরে। তিনি এই জেলার মেয়ে। পরিবারের সবাই তাঁকে পুতুল নামে ডাকতেন। বাড়িটি মায়ের নামে ‘তৈয়বা ভিলা’ নামকরণ করা রয়েছে। এই বাড়িতেই কেটেছে তাঁর শিশু ও কিশোরীকাল।
দিনাজপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ১৯৫৪ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এই বিদ্যালয় থেকেই ১৯৬০ সালে মেট্রিক পাস করেন বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
দিনাজপুর পৌর শহরের বালুবাড়ি এলাকায় অবস্থিত তৈয়বা ভিলায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি বর্তমান ‘ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় তলায় বেগম খালেদা জিয়া এবং তাঁর বাবা-মা যে কক্ষে বসবাস করতেন, ঐ কক্ষগুলো সংরক্ষিত হিসেবে তালাবদ্ধ রয়েছে। এসব কক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য কারিনা বেওয়া নামের একজন বৃদ্ধা আছেন। তিনি দীর্ঘদিন খালেদা জিয়ার বাবা-মাকে দেখাশোনা করেছেন। বর্তমান তিনি ঐ কক্ষগুলো দেখাশোনা করছেন।
কেয়ারটেকার কারিনা বেওয়া বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এখানে দায়িত্বে আছি। আমি খালেদা জিয়াকে এখানে এসে পাইনি। তাঁর বাবা-মাকে পেয়েছি। উনারা খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আমাকে অনেক খুব ভালবাসতেন। আজ পর্যন্ত এখানে আমি আছি। তাঁদের আত্মীয়-স্বজনরা প্রায়ই এই বাসায় আসেন। বর্তমান খালেদা জিয়া মৃত্যুর সংবাদে সেখানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ক্যামেরার সামনে কেই কথা বলতে চাননি কেউ আলোচনাকালে খালেদা জিয়ার শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ৭৮ বছর বয়সী মোস্তা হাসানুর নামে এক প্রতিবেশী বলেন, তৈয়বা ভিলাটি খালেদা (পুতুল) আপার মায়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে। আপা আমার থেকে দুই থেকে তিন বছরের বড় হবেন। পাশাপাশি বাড়ি আমাদের, আমি সবসময় তাঁদের বাড়িতে যাওয়া-আসা করতাম। তাঁর বাবা-মা আমাকে অনেক ভালবাসতেন এবং পুতুল আপাও আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
খালেদা জিয়ার খালাতো ভাই আবু তাহের আবু বলেন, “আমি আপার চেয়ে অনেক ছোট। আমি জন্মের পর দিনাজপুরে তাকে পাইনি। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি চলে যান। তাঁর মা আমার মায়ের ছোট বোন। তাঁর বাবা-মা আমাকে খুব আদর-যত্ন করতেন। আমরা তার মৃত্যুতে খুব শোকাহত।”
দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজমা ইয়াসমিন বলেন, “আমি এবং আমার স্কুলের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ধন্য, বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী দেশে-বিদেশে অনেক উচুঁ পর্যায়ে আছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের গর্ব। তিনি আমাদের দিনাজপুরের মেয়ে এবং এই স্কুলেরই শিক্ষার্থী। তিনি ১৯৫৪ সালে এই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। পরে ১৯৬০ এখান থেকে এসএসসি পাস করেন। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দিনাজপুরের সর্বত্তই শোক বিরাজ করছে।

৭৫ বাংলাদেশ রিপোর্ট।।