শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ক্ষুদ্র বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই সাবেক নেতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে সোনালী ব্যাংকের নিচতলায় সমিতির সাধারণ সদস্যদের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে ধরেন সমিতির সাধারণ সদস্য মো.ছামিউল ইসলাম সাদা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ ব্যবসায়ী সংগঠন ঝিনাইগাতী ক্ষুদ্র বণিক সমবায় সমিতি লিঃ-এর ২০১৮ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো.জাকির হোসেন এবং কার্যকরী সদস্য ছিলেন আলহাজ্ব মো.জহুরুল ইসলাম মিলন। দায়িত্বকালীন সময়ে জাকির হোসেন সদস্যদের ভর্তি ফরম বাবদ ৩০ জনের কাছ থেকে মোট ৬০ হাজার টাকা এবং জহুরুল ইসলাম মিলন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি থেকে ৬৮ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়,দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় এই বিপুল অর্থ সমিতির হিসাবে জমা না দিয়ে তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেন। পরবর্তী কমিটির সভাপতি মো.আবু বাহার ও সাধারণ সম্পাদক মো.মেহেদী হাসান হালিম বারবার নোটিশ প্রদান করলেও তাঁরা সাড়া দেননি।
বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি সমিতির কার্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতি,সম্পাদক, উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যকরী সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি রেজুলেশন গ্রহণ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলাম বাদশা,এস. এম.এ.ওয়ারেজ নাইম,আবু তাহের,আলহাজ গোলাম মোস্তফা,লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন কমিটির নেতৃবৃন্দ। পরবর্তী কমিটিগুলোও বারবার চেষ্টা করেও আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মো.ছামিউল ইসলাম সাদা বলেন,সমিতির এই অর্থ কোনো ব্যক্তির সম্পদ নয়,এটি সকল সদস্যের যৌথ সম্পদ। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার মাধ্যমে এভাবে সমিতির সম্পদ আত্মসাৎ করা অনৈতিক, বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা সদস্যরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
তিনি আরও বলেন,সাংবাদিক ভাই আপনারা জাতির বিবেক। আপনাদের নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশ হলে একদিকে আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে,অন্যদিকে উপকৃত হবেন সমিতির হাজারো সদস্য।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হালিম স্বীকার করেন,তৎকালীন কমিটি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ওই দুই ব্যক্তির কাছ থেকে সমিতির টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়। এ বিষয়ে আমরা রেজুলেশন করে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি।
বর্তমান কমিটির সভাপতি আলহাজ মোখলেছুর রহমান খাঁন ও সহ-সভাপতি কামরুল হাসান কামরান জানান,
উক্ত দুই ব্যক্তির নিকট থেকে সমিতির পাওনা টাকা আদায়ে চেষ্টা করা হবে। আদায় করতে ব্যর্থ হলে সমবায়ী আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির বর্তমান সভাপতি আলহাজ মোখলেছুর রহমান খাঁন, সহ-সভাপতি কামরুল হাসান কামরান,সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হালিমসহ সাবেক ও বর্তমান কমিটির সদস্যবৃন্দ,সাধারণ সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক,শেরপুর প্রতিনিধি।।