ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিস একশ্রেণির দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দলিল লেখক, স্ট্যাম্প ভেন্ডার ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শেরেস্তা ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার ও কর্মচারী লাল মিয়ার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সাবরেজিস্ট্রারের নাম ভাঙিয়ে এ দালাল সিন্ডিকেট প্রতি দলিল থেকে ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা শেরেস্তা আদায় করছে। এছাড়াও সাবরেজিস্ট্রি মসজিদের নামে নিচ্ছে ১০০ টাকা, দলিলদাতার আঙ্গুলীর ছাপ নেওয়ার সময় অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে আরও ১০০ টাকা।
সরজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, দলিলের ফি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হলেও শেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) ছাড়া সাবরেজিস্ট্রার কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। তার চাহিদামতো টাকা না পেলে বিভিন্ন কাগজপত্রের অজুহাতে হয়রানি করা হয়। আবার টাকা পেলে সব বৈধ হয়ে যায়। ভুক্তভোগী দুল্লা ইউনিয়ন চেচুয়া গ্রামের আবদুল রহিম জানান, আমার ৫ শতাংশ বাড়ি সংশোধনী দলিল রেজিস্ট্রি করতে সাব রেজিস্ট্রারের নামে ১০ হাজার ও অফিসের খরচ বাবদ ৩
হাজার মোট ১৩ হাজার টাকা নিয়েছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, শেরেস্তা না দিলে জমি রেজিস্ট্রি তো দূরের কথা সীমাহীন হয়রানির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। তাই বাধ্য হয়েই শেরেস্তা দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হয়। সিন্ডিকেটের ভয়ে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জবাবদিহিতা না থাকায় যে যার মতো করে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ টাকা সিন্ডিকেট সদস্যদের মাঝে ভাগবাঁটোয়ারা হয়। এমনকি এর ভাগ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে হাদিয়া পাঠায়। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সুত্রে জানা যায় সরকারি ফিসহ ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা অফিসের খরচ, বিভিন্ন দিবসের চাঁদা, মসজিদের উন্নয়ন বাবদ খরচ হয়। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারীর সাথে কথা হলে তিনি জানায় অফিসে কোনো শেরেস্তা আদায় করা হয় না। দলিল লেখকরা চুক্তি করে কিছু টাকা অতিরিক্ত নিতে পারে। জেলা রেজিস্ট্রার এর সাথে কথা হলে তিনি জানায় অফিসের নাম করে টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।