গর্ভের শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না। এর ফলে নারী নির্যাতন বন্ধ ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কেন অবৈধ নয় জানতে চেয়ে ২০২০ সালে একটি রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার পরিচালক ডা. তাহমিনা সুলতানা এ প্রতিবেদন জমা দেন।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা এ নীতিমালার ওপর মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। হাইকোর্টের রুলের পর নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আলট্রাসনোগ্রাম করলে সাধারণত মাতৃগর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় মেডিকেল রিপোর্টে উঠে আসে। ফলে বাবা-মা ও স্বজনরা সন্তান জন্মের আগেই জানেন ছেলে হচ্ছে নাকি মেয়ে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন নীতিমালার আলোকে এখন থেকে আর এই তথ্য জানা যাবে না। অর্থাৎ আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবেন না চিকিৎসক ও হাসপাতালা-ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
রিটকারী আইনজীবী জানান, ভারতে আইন করে গর্ভজাত সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গর্ভের শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা হলে প্রসূতি মায়ের মানসিক চাপ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে গর্ভপাত করার ঘটনাও ঘটে।