সব
বর্তমান এশিয়া মহাদেশ তথা সমগ্র পৃথীবির সব থেকে প্রিয় ফল আম। আমের জন্মস্থান নিয়ে রয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। অবিভক্ত ভারত বর্ষের কোথায় প্রথমে দেখা গেছে তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমাদের এই বাংলা জনপদের বরেন্দ্রভূমিতেই যে আমের আদিবাস এ সম্পর্কে আম বিজ্ঞানীরা একমত।
ইতিহাস থেকে জানা যায় খ্রিস্টপুর্ব ৩২৭ এ আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় আম থেকে খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এ সময় আম ছড়িয়ে পড়ে মালয় উপদ্বীপ, ইন্দোনেশীয়া, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও মাদাগাস্কারে। চীনা পর্যটক হিয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে এই অঞ্চল সফরে এসে বাংলাদেশের আম কে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করে। ২৩৩১ খ্রিস্টাব্দ থেকে আফ্রিকায় আম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬ শতাব্দীতে পারস্য উপসাগর, ১৬৯০ সালে ইংল্যান্ডে আম চাষ বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে। ১৭ শতাব্দীতে ইয়ামেনে, ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে, ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালিতে আম চাষের খবর জানা। ১৮৬৫ খ্রীস্টাবে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাটিতে প্রথম আমের আটি গাছ হয়। এভাবেই ধীরে ধীরে আম ফলটি বিশ্ববাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। জানা যায় মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৬) ভারতের বিহারে দারভাঙ্গা জেলার শাহবাগে এক লাক আমে চারা রোপন করে উপমহাদেশ প্রথম একটি উন্নত জাতের আম বাগান সৃষ্টি করেন।
আমের জাত- আমের আছে বাহারী নাম, গন্ধ ও স্বাদ। ১-ফজলি,২-ল্যাংড়া, ৩-গোপাল ভোগ, ৪-মোহন ভোগ, ৫-ক্ষীরসাপাতি, ৬-জিলাপী ভোগ, ৭-আম্রপালি, ৮-বারি ফোর, ৯-হাড়ি ভাঙ্গা, ১০-ক্ষীর ভোগ, ১১-বৃন্দাবনী, ১২- চন্দনা,১৩-হাজিডাং, ১৪-সিন্দুরি,১৫-গিরিধারী, ১৬-বৌ ভোলানী, ১৭-জামাই পছন্দ, ১৮-বাদশা ভোগ, ১৯-রানী ভোগ, ২০-মিছরিকান্ড, ২১-বাতাসা, ২২-মধুচুকী, ২৩-রাজভোগ, ২৪-মেহের সাগর, ২৫-সুন্দরী, ২৬-গোপালবাস, ২৭-পানবোটা, ২৮-দিলসাদ, ২৯-কলাপাহাড়ি, ৩০-কাঁচামিঠা, ৩১-তততুরি, ৩২-বায়ইঝুঁকি, ৩৩-মিছরি ভোগ, ৩৪-আশ্বিনা, ৩৫-ব্যানানা, ৩৬-ক্ষীর ভোগ, ৩৭-গৌড়মতি,৩৮-মল্লিকা, ৩৯-কিউ জাই, ৪০-দুধ সর ও ৪১-নাবিলা। নওগাঁ রাজশাহী প চাপাই নবাবগঞ্জে প্রায় তিনশত জাতের আম পাওয়া যায়। তবে ভালো জাতের আমের উদ্ভব ও চাষের সুবিধার কারণে বর্তমানে অনেক দুর্লভ জাতের আম বিলুপ্ত প্রায়। বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় আমের হাট নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায়।
মন্তব্য