সব
পঞ্চগড় তেতুলিয়ায় উপজেলার মাঝিপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কমিটির বিরুদ্ধে বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে,ওই প্রতিষ্ঠানটির কমিটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো; আজমত আলী ও বিদ্যালয় পরিচালনা ব্যবস্থাপনা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মো;একবাল হোসেন (পুচকো)পঞ্চগড় ডিজি প্রতিনিধি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হক,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী,উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে,ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ তিনি গোপনে রাতের আধারে নিজেদের পছন্দের লোককে নিয়োগের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের করে নিয়োগ প্রদান করে।
এ বিষয়ে শালবাহানের মো; ইমরান ভুক্তভোগী গত ৮জানুয়ারী রবিবার পঞ্চগড় বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে প্রকাশ জানা যায়,মাঝি পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, নৈশ্য প্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য গত ০২/১২/২০২২ ইং তারিখে একটি দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যে ( পত্রিকা এলাকা আসে না গোপন)।আগ্রাহী নিয়োগ প্রার্থীদের কাছে থেকে গোপনে আবেদন আহবান করেন বিদ্যালয় পরিচালনা ম্যানেজিং কমিটি। মাঝি পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাজী আজমত আলী ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন পোচকু নিয়োগ নামে চাকরী দিবেন অর্থ বানিজ্য করেন বলে ভুক্তভোগী তার লিখিত অভিযোগে জানান।
এব্যাপারে শালবাহান ইউপির ধারাগছ গ্রামের একজন প্রার্থী নৈশ প্রহরি পদের প্রার্থী ও মামলার বাদী মোঃ ইমরান হোসেন জানান, নিয়োগবিধি নীতিমালা মেনে গত ১৪/১২/২০২২ তারিখে আবেদন করেন। পরে দেখেন টাকার বিনিময় চাকরি প্রদান করেন।
আবেদনের পর হইতে বিদ্যালয় নিয়োগের কোন নিয়ম না মেনে গোপনীয়তার সহিত নৈশ্য প্রহরী পদসহ আরো বিভিন্ন পদের আবেদনকারীদের নিকট হতে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করেন বলে জানান। এমনকি বাদীর মামলার এজাহারে জানা যায় যে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন পোচকু তাঁর আপন ভাগিনী জামাই আশরাফুল ইসলামের নিকট হতে নয় লক্ষ টাকার বিনিময়ে নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ দেওয়ার ফাইনাল করিয়াছেন। আর অন্য বাদীর নিকট দশ লক্ষ টাকা দাবী করেন মর্মে এজাহারে জানা যায়। যা বাদী ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন। অপর দিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি তাঁর আপন ভাতিজা রবিউল ইসলামের নিকট হতে অনৈতিক অর্থ উৎকোচের বিনিময়ে অফিস সহায়ক ও অত্র বিদ্যালয়ে আয়া পদে ম্যানেজিং কমিটির আরেক সদস্য মজিবর রহমানের নিজ কন্যার নিকট হতে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার অপচেষ্টা ফাইনাল করিয়াছেন। অপরদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদেও প্রচুর অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার চুক্তি পায়তারা চলছে বলে জানা যায়। মামলার বিবাদীগন প্রার্থীদেরকে যাচাই বাছাই ছাড়াই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এবং গভীর ষড়যন্ত্র করে নিজ লোকদেরকে মোটা অংকের অর্থ ঘুষ লেনদেন হওয়ায় বাদী অদ্য ০৮/০১/২০২৩ তারিখে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইকবাল হোসেন পোচকুকে ১নং ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাজী আজমতকে ২নং বিবাদী করে ৩ নং বিবাদী পঞ্চগড় ডিজি প্রতিনিধি৪ নং তেতুলিয়া মাধ্যমিক কর্মকর্তা৫ নং বিবাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ৭ জন।যাহার মামলা নং-পঞ্চগড় বিজ্ঞ জেলা জজ কোর্টে ০২/২০২৩ নং মামলা দায়ের করেন। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে ওই এলাকা। এলাকায় সচেতনমহলের দাবী
তদন্তের মাধ্যমে এই গোপন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত এবং নতুন করে প্রকাশ্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে যোগ্য মেধা প্রার্থীদেরকে নিয়োগের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও সহসভাপতির শাস্থির দাবি করা হয়।সরজমিনে তথ্য সুত্রে জানা যায়, শূন্যপদে আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী, অফিস সহকারী এবং অফিস সহায়ক এই চারটি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আগের অব;স প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলী। তবে কত তারিখে কিংবা কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, তা জানতে চাইলে এটি প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
নিয়োগের বিষয়ে লোক মুখে শোনার পর অফিস সহকারী পদে নিজের ভাতিজার জন্য যোগাযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম। পরে গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সোলাইমান আলীর বাড়িতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে যায় সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম বাবু। আলোচনার এক পর্যায়ে ওই একটি পদের জন্য তার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক ও সহসভাপতি।অভিযোগ করেনহ, আগ্রহী অনেক প্রার্থী প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে ব্যর্থ তারা। তবে বিধিমালার দোহাই দিয়ে পত্রিকার নাম ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আজমত আলী। নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলেই তিনি নাকি বলেন, আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। এখন পত্রিকার নাম শুনে কি হবে!
মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আজমত আলী সাথে। নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়টি জানতে চাওয়ার সাথে সাথেই তিনি ফোনটি কেটে দেন। পরে তাকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি সাজিয়া ফেরদৌসি সম্পার মাস্টার্স পরিক্ষা চলছে দিনাজপুর সরকারী কলেজে। কথা হয় তার স্বামী এবং প্রতিষ্ঠানের সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম বাবুর সাথে। তিনি এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পৃথক চারটি পদে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হবে। আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। বিধি মেনেই আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছি।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, কোন পত্রিকায় কিংবা কত তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে তা আমার মনে নেই। স্কুলের কাগজপত্র দেখতে হবে।
এ ব্যাপারে -উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, আমার দপ্তরে এখন কোন অভিযোগ আসেনি। তবে শুনেছি পঞ্চগড় ডিসি ও নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। তবে সেটির সর্ব শেষ অবস্থা এখনও জানি না। আমার কাছে অভিযোগ আসলে তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
মন্তব্য